সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করতে হবে

পরিকল্পনামন্ত্রী

দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করতে তিন সিটি করপোরেশন মেয়রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, যদি অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধ করা না যায়, তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে এত টাকা আমরা কোত্থেকে দেব। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এলজিইডির অডিটোরিয়ামে সিটি গভর্নেন্স প্রকল্প উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে ৩০ ভাগ লোক শহরে বসবাস করছে। ২০৩৫ সালে তা বেড়ে হবে ৫০ ভাগ। এ জন্য নগর শাসনব্যবস্থা অবশ্যই টেকসই উন্নয়ন উপযোগী হতে হবে। এ কাজটি করতে হবে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে।

এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী ওয়াহিদুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাপানের রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোসিমা ও জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ মিকিও হাতায়েদা। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব মঞ্জুর হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পৃথিবীর সব শহরেরই একটা নিজস্বতা রয়েছে, রয়েছে ঐতিহ্য এবং ইতিহাস। এসবের ওপর ভিত্তি করেই সেই শহরের শাসন ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো গড়ে ওঠে। এ কথাগুলো মাথায় রেখেই সরকার সিটি গভর্নেন্স প্রকল্পটি হাতে নেয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী উপস্থিত তিন সিটি মেয়রের উদ্দেশে বলেন, 'আপনারা প্রকল্পটির গুণগত মান নিশ্চিত করবেন। সেই সঙ্গে অপচয় রোধ ও দুর্নীতি রোধে দয়া করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। শহরের যেসব জায়গা ইতিমধ্যে অবৈধ দখলে চলে গেছে আপনারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে তা পুনরুদ্ধার করবেন। এটা আপনাদের কাছে আমার জোর দাবি।' তিনি বলেন, একটি কথা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে, আমরা যেখানে থেমে যাব সেখান থেকেই পরবর্তী প্রজন্ম তাদের যাত্রা শুরু করবে। মন্ত্রী এ সময় শহর ব্যবস্থাপনায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে গুরুত্ব সহকারে দেখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারলে এ থেকে বায়োগ্যাস ও বিদ্যুৎ আমরা পেতে পারি। শহর ব্যবস্থাপনাকে সংস্কৃতি ও মননশীলতার অংশ উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, শহর অবকাঠামোয় যেন ছোটদের জন্য খেলার মাঠ, বয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত প্রান্তর থাকে, সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে। শিরো সাদোসিমা বলেন, একটি শহরকে শহর হিসেবে গড়ে তুলতে হলে ওই সমাজ ও সম্প্রদায়ের মূল্যবোধ, ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে প্রাধান্য দিয়ে শাসন ব্যবস্থাকে গড়ে তুলতে হয়। এভাবে শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠলে তখন শহর টেকসই উন্নয়নের ভিত্তিতেই গড়ে ওঠে। মিকিও হাতায়েদা বলেন, নিবিড় শাসন ব্যবস্থার ধারণা থেকেই সিটি গভর্নেন্স প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে এবং জাইকা এতে সম্পৃক্ত হয়েছে। মোট দুই হাজার ৯৪৩ কোটি টাকার মধ্যে জাইকা দুই হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা দেবে। এর সুদ ধরা হয়েছে ০.০১ ভাগ যা ৪০ বছরে শোধ করতে হবে। গ্রস পিরিয়ড ধরা হয়েছে ১০ বছর। উল্লেখ্য, সিটি গভর্নেন্স প্রকল্পটি জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০২০ মেয়াদে শেষ হবে। নারায়ণঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।

সর্বশেষ খবর