সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

লাউ চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষক দম্পতি

লাউ চাষ করে স্বাবলম্বী কৃষক দম্পতি

করিমুল হক ও শাহেরা খাতুন

আগাম হাইব্রিড জাতের হাইগ্রিন লাউ আবাদ করে পরিবারে স্বচ্ছলতা এনেছেন জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর ইউপির নাফানগর গ্রামের কৃষক করিমুল হক।
বাণিজ্যিক আকারে মাত্র দেড় একর জমিতে নিজের উৎপাদিত এ লাউ চাষই তার পরিবারকে স্বাবলম্বী করেছে। তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি এখন এলাকার মডেলে পরিণত হয়েছেন।

দেড় একর জমিতে লাউ চাষে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে। করিমুলের লাউ বাগানে প্রায় ১১ হাজার লাউ ধরেছে যার প্রতিটি ১২ টাকা মুল্যে সে বিভিন্ন পাইকারী বাজারে বিক্রি করে তা থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। খরচ বাদে মাত্র দুই মাসে সে ১ লাখ টাকা আয় করতে সক্ষম হয়েছেন।

কৃষক করিমুল হক জানায়, সংসারের অভাব যখন কাটছিলো না, তখন তিনি সবজি চাষে নামলেন। এ সময় করিমুল ও তার স্ত্রী শাহেরা খাতুন বোচাগঞ্জ কৃষি বিভাগের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করেন। তাদের পরামর্শে ওই জমিতে অন্যান্য ফসলের পরিবর্তে বাণিজ্যিক আকারে সবজি চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এজন্য তারা প্রথমে মেটাল কোম্পানীর কাছ থেকে বিভিন্ন হাইব্রিড বীজ উৎপাদন করার প্রশিক্ষণ নেন। মেটাল কোম্পানি থেকে টমেটো, বেগুন, শশা, করলা ও লাউ হাইব্রিড বীজ উৎপাদন প্রশিক্ষণ নিয়ে পরবর্তীতে তারা নিজেরাই বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের বীজ উৎপাদন করেন। নিজের উৎপাদিত হাইব্রিড বীজ দিয়ে গত দুই মাস পূর্বে দেড় একর জমিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী আগাম লাউ চাষ শুরু করেন। দেড় একর জমিতে লাউ চাষ বাবদ খরচ করেন ৩০ হাজার টাকা। এ চাষে লাউ বাগানে প্রায় ১১ হাজার লাউ ধরেছে যার প্রতিটি ১২ টাকা মুল্যে সে বিভিন্ন পাইকারী বাজারে বিক্রি করে তা থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় করেন। খরচ বাদে মাত্র দুই মাসে সে ১ লাখ টাকা আয় করতে সক্ষম হন। যা অন্যান্য ফসলের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। একই জমিতে সে এখন হাইব্রিড জাতের করলা চাষের পরিকল্পনা নিয়েছেন।

করিমুলের পাশাপাশি তার স্ত্রী শাহের খাতুনও স্বামীকে সব সময় মাঠে সময় দেয়। এমনকি শাহেরা নিজেই বিভিন্ন সবজির হাইব্রিড জাত উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা আনতে স্বামীর পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে বোচাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম করিমুলের লাউ চাষ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে সাংবাদিকদের জানান, মেধা, শ্রম ইচ্ছা শক্তি থাকলেই যে কোন কৃষকই তার ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারেন। এজন্য বোচাগঞ্জ কৃষি বিভাগ এলাকার কৃষকের যে কোন সমস্যা সমাধান করার জন্য মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক মেধা ও শ্রম দিয়ে যাচ্ছে এবং এই অঞ্চলে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সবজি চাষে কৃষকের আগ্রহ ও তা থেকে স্বল্প সময়ে দ্বিগুণ মুনাফা বিষয়টিকে তিনি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ২২ ডিসেম্বর ২০১৪/ রশিদা

সর্বশেষ খবর