রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

গর্ভপাত হওয়া তুলসী এখনো হাসপাতালে নতুন গ্রেফতার নেই

জমির বেগ্, ফেনী

ফেনীতে হামলার শিকার হয়ে তুলসী রানী দাস তুনি (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত সন্তান প্রসব হওয়ার ঘটনায় পুলিশ শুক্রবার আটজনকে গ্রেফতার করার পর নতুন আর কাউকে আটক করতে পারেনি। ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব মোর্শেদ জানান, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এদিকে তুলসী রানীকে ৫০ হাজার টাকা অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী। অন্যদিকে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কেন্দ্রীয় ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল গতকাল বিকালে জেলা নেতাদেরকে নিয়ে ঘটনাস্থল জেলেবাড়ি পরিদর্শন করেন। পরে পুলিশ সুপারের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে রাতে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে তুলসীকে দেখতে যান।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম গতকাল জেলেবাড়ি পরিদর্শন শেষে জানান, লক্ষীপূজার আতশবাজি স্থানীয় ইকবালসহ কয়েকজন আবদার করে না পাওয়ার জের ধরে সামান্য হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন দোকানপাট ও বাড়িঘরে যে হামলার কথা বলা হচ্ছে, আসলে তা সত্য নয়। পাড়াটিতে তুলসী রানীর স্বামীর একটি চা-দোকান ছাড়া অন্য কোনো দোকান নেই। তার স্বামীর দোকানে থাকা লোকজনের সঙ্গে সেদিন অন্য ছেলেদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। দোকানের পেছনে তাদের বাড়ি হওয়ায় তুলসীও ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তবে তার গায়ের হাত দেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারেনি। ঘটনার তিন দিন আগে থেকে তুলসীর প্রচণ্ড রক্তপাত হচ্ছিল বলে তারাও স্বীকার করেছেন।

এ কারণে তারা স্থানীয় বৈদ্য থেকে পানি, তেলপড়াও নিয়েছিলেন। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কোনো সম্পৃক্ততার কথা যারা লিখছেন, তারা জঘন্য মিথ্যা লিখছেন। ফায়দা লোটার জন্য এটি প্রচার করছেন তারা।

জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুখদেব কুমার নাথ জানান, স্বামীকে মারধর করার সময় তুলসী ঘটনাস্থলে এলে তাকেও একটি লাথি মারা হয়। তারা কেউ দলীয় পদ-পদবিধারী না হলেও প্রায় সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের লোক।

ফেনী জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, ‘এখানে দলীয় পরিচয় এনে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় যেভাবে লেখা হচ্ছে তা সত্য নয়। এ ধরনের ঘটনা যে-কারও সঙ্গে ঘটতে পারে। তবে ঘটনা একটি ঘটেছে। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

প্রসঙ্গত, বুধবার এশার নামাজের পর ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে মাথিয়ারার জেলেপাড়ায় আতশবাজি ফোটানোকে কেন্দ্র করে মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঘটনায় উভয় সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। ঘটনায় তুলসী রানী দাস তুনি (২০) নামে এক প্রসূতির মৃত সন্তান প্রসব হয়েছে বলে তার পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জনৈক জহর লাল দাস ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর