বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

পত্রিকার অনলাইনের আলাদা নিবন্ধন যুক্তিসঙ্গত নয় : নোয়াব

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিউজপেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ছাপা পত্রিকাগুলো সরকারের সব রকম নিয়ম মেনে চলছে। সময়ের প্রয়োজনে এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ছাপা পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণ রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে দেশের পাঠক ছাড়াও প্রবাসী বাঙালিরা তাৎক্ষণিক দেশের খবরাখবর জানতে পারছে। তাই ছাপা পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের জন্য আলাদা নিবন্ধন কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়, এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেও নোয়াব মনে করে না। বিবৃতিতে নতুন করে নিবন্ধন নয় বরং প্রচলিত আইন ও নীতিমালার আওতায় অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনার দাবি জানিয়েছে নোয়াব। ছাপা পত্রিকার অনলাইন সংস্করণসহ সব অনলাইন গণমাধ্যম নিবন্ধন বিষয়ে সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, নীতিমালা বা কমিশন হওয়ার আগে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশে অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরুর এ ঘোষণা স্ববিরোধী ও উদ্দেশ্যমূলক বলে মনে করে নোয়াব। প্রস্তাবিত অনলাইন নীতিমালায় কমিশন গঠন করে অনলাইন গণমাধ্যমগুলো পরিচালনার কথা বলা হলেও ওই কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা থাকবে না। ফলে কমিশন সরকার, বিশেষ করে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে বলে নোয়াব মনে করে। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, এ ধরনের উদ্যোগ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বদলে ক্ষুণœ করে। নোয়াবের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ কথা সত্য, দেশে অসংখ্য অনলাইন পত্রিকা রয়েছে, যেগুলো প্রকাশে কোনো বিধিনিষেধ নেই। কিন্তু এগুলো প্রকাশ হওয়ার কারণে রাষ্ট্র বা সরকারের কোনো ক্ষতি হয়েছে বলে নোয়াবের জানা নেই। অনলাইন পত্রিকাগুলো স্বাধীন মতপ্রকাশে কাজ করছে। তা ছাড়া এ ধরনের পত্রিকা প্রকাশ করলেও কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যদি কেউ নিয়ম লঙ্ঘন করে থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিবৃতিতে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন না করে ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং পলিসি, সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ ছাপা পত্রিকার জন্য প্রযোজ্য আইন ও নীতিমালাসমূহ অনলাইন গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে জানিয়ে বলা হয়, যতসংখ্যক গণমাধ্যম সৃষ্টি হোক না কেন, চূড়ান্ত বিচারে এর টিকে থাকা নির্ভর করে পাঠক, শ্রোতা বা দর্শকের ওপর। তাই চূড়ান্ত বিচারে পাঠকের ওপর এগুলোর অস্তিত্ব নির্ভর করবে এবং সেই বিচারের জন্য অপেক্ষা করাই শ্রেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, নোয়াব লক্ষ্য করছে, অনলাইন নীতিমালায় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কথা বলা হলেও ওই ‘কর্তৃপক্ষ’ (কমিশন) নির্ধারণ ছাড়াই সরকার তথ্য অধিদফতরের কাছে নিবন্ধনের দায়িত্ব দিয়েছে, যা যুক্তিসংগত নয়। কমিশন গঠিত হওয়ার আগে সরকার অনলাইন গণমাধ্যমের নিবন্ধন বা পরিচালনার বিষয়গুলো নিজ এখতিয়ারে রাখলে এ ধরনের সংবাদমাধ্যমের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ কঠোর হবে, যা মুক্ত সাংবাদিকতার অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে। তা ছাড়া এই নিবন্ধনকে কেন্দ্র করে দলীয় পরিচয় দেখা, হয়রানি বা আর্থিক লেনদেনের মতো স্পর্শকাতর অভিযোগ ওঠাও দেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় অসম্ভব ব্যাপার নয়। নোয়াব মনে করে, এ নীতিমালার সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারসহ নতুন এ শিল্পের ভবিষ্যৎ জড়িত। তাই তাড়াহুড়া না করে যৌক্তিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ও বাস্তবতার নিরিখে যে কোনো উদ্যোগ নেওয়াই বাঞ্ছনীয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর