বুধবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা
কাল যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

ওসমানীকে বিশ্ববিদ্যালয় চায় সিলেটবাসী

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

দেশের প্রথম সরকারি আটটি মেডিকেল কলেজের মধ্যে অন্যতম সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের আশ্বাস দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেটবাসী আশা করছেন, আগামীকাল তার সিলেট সফরের সময় ঘোষণা প্রদানের মধ্য দিয়ে সেই আশ্বাসের বাস্তবায়ন ঘটবে। স্থানীয় এবং কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ঈর্ষণীয় ফলাফল ও সাফল্যে এরই মধ্যে আলোকিত বিদ্যাপীঠ হিসেবে ওসমানী মেডিকেল কলেজ দেশে-বিদেশে সুনাম কুড়িয়েছে। এমবিবিএস কোর্স ছাড়াও কলেজটিতে স্নাতকোত্তর (পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন) পড়ালেখা ও গবেষণা চলছে প্রায় আট বছর ধরে। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের। এর আগে সিলেটে একাধিক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওসমানী মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীতকরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তার এই প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এ কারণে ২১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর সিলেট সফরের সময় ওসমানী মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা আসবে বলে সিলেটবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, প্রয়োজনীয় জনবল ও অবকাঠামো বিদ্যমান থাকায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হতে কেবলমাত্র একটি স্বীকৃতি বা ঘোষণা প্রয়োজন। সূত্র জানায়, ১৯৬২ সালে মাত্র ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এমবিবিএস কোর্সের যাত্রা শুরু করেছিল সিলেট মেডিকেল কলেজ (বর্তমান ওসমানী মেডিকেল কলেজ)। বর্তমানে এমবিবিএস কোর্সে প্রতিবছর ১৯৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। কলেজটিতে বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, কাশ্মীর, ফিলিস্তিন, ইরান, ইরাক, মালয়েশিয়া, ভুটান এবং ব্রিটিশ ও আমেরিকান বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করছেন। অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী জানান, ২০০৯ সাল থেকে কলেজটিতে ডেন্টাল ইউনিট চালু হয়েছে। প্রতি বছর ডেন্টাল বিভাগে ৫২ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। দেশের অন্য যে কোনো মেডিকেল কলেজের চেয়ে পড়ালেখায় ওসমানী মেডিকেল পিছিয়ে নেই। এমনকি হরতাল-অবরোধেও কলেজটির পাঠদান ও পরীক্ষায় কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। কোনো অবস্থাতেই পরীক্ষা ও ফলাফলের তারিখ পরিবর্তন হয়নি। গত বছর টানা বর্ষণে পরীক্ষার হলে পানি উঠলেও শিক্ষার্থীরা হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, তবুও তারিখ পেছানো হয়নি। কলেজ সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন (স্নাতকোত্তর) চালু করা হয়। চারটি ডিপ্লোমা কোর্স দিয়ে শুরু হয়েছিল পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন। বর্তমানে কলেজটিতে ২৬টি কোর্স চালু রয়েছে। এ ছাড়া কলেজটি থেকে শিক্ষার্থীরা ডিপ্লোমা, এমএস, এমডি ও এমফিল করার সুযোগ পাচ্ছেন। ২০১৪ সালে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন ওসমানী হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী। অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে তিনি কলেজটিকে দেশসেরা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি তিনি শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করারও চেষ্টা চালাচ্ছেন। দায়িত্ব পাওয়ার পরই তিনি মেডিকেল কলেজে স্থাপন করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশালাকার প্রতিকৃতি। কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীতকরণে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী জানান, কলেজটিতে স্নাতকোত্তর পড়ালেখা ও গবেষণা চলছে। একটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করতে যেসব সুবিধা থাকা প্রয়োজন তার সবই আছে ওসমানীতে। ওসমানী মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করতে বাড়তি জনবল ও অবকাঠামোর প্রয়োজন নেই। তিনি আশা করছেন, সিলেট সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন বছরের উপহার হিসেবে ওসমানী মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণা দেবেন।

সর্বশেষ খবর