শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুন্দরবনে ড্রোন আটক : বিদেশি তিন সাংবাদিক বিপাকে

বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে কটকা অভয়ারণ্যের আকাশে ওড়ানো ড্রোন আটক করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে বন বিভাগ ও বিদেশি তিন সাংবাদিক। সপ্তাহখানেক আগে সুন্দরবনে ড্রোনের সাহায্যে ছবি তোলার সময় বন বিভাগ বিদেশি ড্রোনটি আটক করে। অনুমতি না নিয়ে অভয়ারণ্যে ড্রোন উড়িয়ে বিপাকে পড়া তিনজন ফ্রান্সের ‘এআরটিই’ টেলিভিশনের সাংবাদিক। একই অবস্থা হয়েছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগেরও। বন বিভাগ এখন আটক এ ড্রোনটি বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবে তা নিয়ে একবার দৌড়াচ্ছে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আর যোগাযোগ করে চলেছে ঊর্ধ্বতন বন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তবু এক সপ্তাহেও ড্রোন বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।জানা গেছে, পাগমা ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানির ‘এমএল বাওয়ালী’ লঞ্চে করে অন্যদের সঙ্গে ফ্রান্সের ‘এআরটিই’ টেলিভিশনের তিন সাংবাদিক গাই কিউসি, টিমো এভাম্যান ও নাসিম এলমাউন সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন। ৩১ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে তারা কটকা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ বনে ক্যামেরা বসানো ড্রোন উড়িয়ে বন্যপ্রাণীসহ জীববৈচিত্র্যের ছবি ধারণ করতে থাকেন। বিষয়টি প্রথমে জেলে-বনজীবীদের নজরে এলে কটকা অভয়ারণ্যে শোরগোল পড়ে যায়। ফরেস্ট রেঞ্জের শাহ নোমান ওই ড্রোনটি নিচে নামিয়ে আনতে বিদেশি তিনজনকে বাধ্য করেন এবং ওড়ানোর জন্য সুন্দরবন বিভাগ থেকে অনুমতি না নেওয়ায় ড্রোনটি আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিন সাংবাদিক সুন্দরবন নিয়ে তাদের দেশের টেলিভিশনের জন্য ডকুমেন্টারি করার কথা জানালে ড্রোনটি রেখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ফ্লাইং ক্যামেরাসহ আটক ওই ড্রোনটি হচ্ছে ডিজেআই কোম্পানির; যার মডেল পি-৩৩০জেড, সিরিয়াল নম্বর পিএলএল-৬৩৬১৫৪১২৬। ব্যাটারিসহ ড্রোনটির সঙ্গে একটি রিমোটও রয়েছে। এটি এ দেশে আনা এবং আকাশে ওড়ানোর জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতিও দেখাতে পারেননি ফ্রান্সের ওই তিন সাংবাদিক। পরে ওই ড্রোন নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। জানানো হয়, বন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। এক সপ্তাহ ধরে আটক এ ড্রোনটির বিষয়ে সুষ্ঠু কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি সুন্দরবন বিভাগ।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন এ ড্রোনটির বিষয়ে কী করা হবে তা জানতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গতকাল চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সেমতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অন্যদিকে পাগমা ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানির মালিক নজরুল ইসলাম দাবি করেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ‘এআরটিই’ টেলিভিশনে জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সুন্দরবন নিয়ে ডকুমেন্টারি তৈরি করতে ‘জেড’ প্রোডাকশন কোম্পানি তিন সাংবাদিককে বাংলাদেশে পাঠায়। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে আমাদের মাধ্যমে সুন্দরবন ভ্রমণে যান। সুন্দরবনে ড্রোন ওড়াতে বন বিভাগের অনুমতি লাগে— এটা ওই তিন সাংবাদিক জানতেন না। এখন তারা ভুল স্বীকার করে সুন্দরবন বিভাগের কাছে ড্রোনটি ফেরত চেয়ে আবেদন করেছেন।

সর্বশেষ খবর