মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

পোশাকশিল্পের করপোরেট কর ১০ শতাংশ করা হবে — বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্প খাতের আয়ের ওপর প্রচলিত করপোরেট কর ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ফের ১০ শতাংশে আনার নীতিগত সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি। শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে জানিয়ে খানিকটা রসিকতা করে নিজেকে বিজিএমইএর প্রতিনিধি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিজিএমইএর দাবির শেষ নেই। আমি নিজেও এখন বিজিএমইএর প্রতিনিধি হিসেবে সরকারের সঙ্গে কাজ করছি। তোফায়েল আহমেদ গতকাল কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দাদের প্রশিক্ষণ শেষে পোশাক কারখানায় চাকরি প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন। বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন সংগঠনটির সহসভাপতি মোহাম্মদ নাসির, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক আনোয়ার উল করীম, স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট (এসইআইপি) প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক আবদুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।

 অনুষ্ঠানে বিলুপ্ত ছিটমহলের নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৯ জনকে সনদ ও কারখানায় চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। সম্প্রতি এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জেতা মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ও মাহফুজা খাতুনকেও অনুষ্ঠানে সম্মাননা জানানো হয়। এ সময় তাদের হাতে পদক তুলে দেওয়ার পাশাপাশি ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রপ্তানিকারকরা রপ্তানি পণ্যের ওপর দশমিক ৬০ শতাংশ হারে উেস কর দেন যা চূড়ান্ত কর হিসেবে গণ্য। আগে এটি ১০ শতাংশ কর হিসাব করা হতো। ফলে আগে গার্মেন্ট মালিকরা বৈধ পথে মুনাফা বেশি দেখানোর সুযোগ পেতেন। কিন্তু চলতি অর্থবছর এ সুবিধা প্রত্যাহার করে অন্যান্য কোম্পানির ন্যায় ৩৫ শতাংশ হারে কর হিসাব করা হয়। এতে কার্যত সরকারের ঘরে বেশি অর্থ না এলেও রপ্তানিকারকদের প্রদর্শিত বা বৈধ অর্থ বেশি দেখানের সুযোগটি চলে যায়। যেমন উেস কর হিসেবে কোনো গার্মেন্ট রপ্তানিকারক ১০ লাখ টাকা কর দিলেন। এতে ১০ শতাংশ কর হিসাব করা হলে তিনি ১ কোটি টাকা আয় করেছেন বলে ধরা হয়। এ অর্থ তিনি বৈধভাবে দেখাতে পারতেন। কিন্তু এটি ৩৫ শতাংশ করায় সরকার উেস কর ১০ লাখ টাকাই পেল, কিন্তু মালিকের মুনাফা দেখায় মাত্র ২৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। অর্থাত্ কার্যত তিনি বেশি আয় করা সত্ত্বেও প্রদর্শিত কিংবা বৈধ আয় হিসেবে তা দেখাতে পারলেন না। ফলে তাদের বিনিয়োগযোগ্য অর্থ কমে যাচ্ছিল। অভিযোগ রয়েছে, অন্যান্য খাতের আয় থেকে কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশে ১০ শতাংশ কর হারের (৩৫ শতাংশ না দিয়ে) সুবিধা নিয়ে আসছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী সাম্প্রতিক সময়ে রপ্তানির বাড়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ২০১৬ সাল ভালো যেতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে অর্থনীতি কীভাবে এগিয়ে যায় বর্তমান অবস্থা তার প্রমাণ। তিনি বলেন, গত বছর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও ইউরোপের মুদ্রা ইউরোর দরপতনের কারণে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। কিন্তু এবার ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও তা ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর