মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

ক্রসিং থেকে বাসকে ঠেলে নিয়ে গেল ট্রেন, নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ফার্নেস তেলবাহী একটি ওয়াগন ট্রেন লেভেল ক্রসিংয়ে আসার আগ মুহূর্তে লাইনের ওপর উঠে পড়ে যাত্রীবাহী বিআরটিসি বাস। তখনই ট্রেনটি বাসে আঘাত হানে। ঠেলে নিয়ে যায় প্রায় দেড়শ গজ দূরে। গতকাল বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর ষোলোশহর দুই নম্বর গেট রেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা গেছেন বাসের দুই নারী যাত্রী। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

নিহত দুই নারীর মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম বিবি মরিয়ম (৩৫)। তিনি নগরীর হালিশহরের বাসিন্দা। তার স্বামী মো. শাহদাত হোসেন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। তিনি শেরশাহ কলোনি থেকে শহর এলাকায় চলাচলকারী বিআরটিসির বাসে করে হালিশহরে ফিরছিলেন। তার সঙ্গে তিন ছেলেও ছিল। তারা কমবেশি আহত হয়েছে। বড় ছেলে সামি (১২) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যরা হলেন মো. নূরুন্নবী (৬০), রত্না বেগম (৩৫) ও তার ছেলে নোমান (৯)। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিএমপির পাঁচলাইশ অঞ্চলের সহকারী কমিশনার আসিফ মহিউদ্দিন বলেন, বাসটি গেট ফেলার আগেই লাইনে ওঠে পড়ে। ওয়াগনটি তখন বাসটিকে ঠেলে লাইনের ওপর অন্তত দেড় শ গজ নিয়ে যায়। পুলিশ এবং স্থানীয় লোকজন হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসকরা দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ষোলোশহর কর্ণফুলী শপিং কমপ্লেক্সের কর্মচারী মো. লিটন জানান, বেলা ১১টার দিকে একটি তেলবাহী ট্যাংকার লেভেল ক্রসিংয়ের কাছাকাছি এলে গেটম্যান গেট বন্ধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিআরটিসি বাসটি গেটম্যানের নিষেধ অমান্য করে আগেই রেললাইনে উঠে পড়ে। মুহূর্তেই বাসটিকে ধাক্কা দেয় ট্রেন। এতে বাসটি লাইনের ওপর সোজাসুজি হয়ে ওয়াগনের মুখোমুখি হয়ে যায়। এরপর ওয়াগন ট্রেন বাসটিকে ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যায়। লিটন জানান, পরে তিনিই বিবি মরিয়ম ও তার তিন ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ট্রেন আসতে দেখে মরিয়ম ছেলে তিনজনকে দ্রুত নামিয়ে দেন। এর পর উনিও নেমে পড়েন। কিন্তু ধাক্কা দেওয়ার পর বাসটি ঘুরে গেলে মরিয়ম চাকায় পিষ্ট হন। অপর অজ্ঞাত মহিলাও একইভাবে বাসের চাকায় পিষ্ট হন।

সরেজমিন দেখা যায়, বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে গেছে। ইঞ্জিনের সামনে টিনের কভারটি খুলে পড়ে আছে। পরে ক্রেন দিয়ে বাসটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ওয়াগনটিও সরিয়ে নেওয়া হয়। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবদুল হাই জানান, এ ঘটনায় বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) ফিরোজ ইফতেখারকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ৭ দিনের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, বিভাগীয় সিগন্যাল ও টেলি কমিউনিকেশন কর্মকর্তা মো. সেলিম ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো) সাইফুল ইসলাম।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর