বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

নজরুল একাডেমির নজরুল উৎসব শুরু

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

কবি কাজী নজরুল ইসলামের আজ ১১৭তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে চার দিনব্যাপী নজরুল উৎসবের আয়োজন করেছে  বেসরকারি পর্যায়ে নজরুল গবেষণা ও চর্চা প্রতিষ্ঠান নজরুল একাডেমি। গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজন সাজানো হয় কথামালা, সম্মাননা প্রদান ও নজরুল একাডেমির মুখপত্র ‘নজরুল একাডেমি পত্রিকা’ রেবেকা সুলতানার ‘তোমার আঁখির মতো আকাশের দুটি তারা’র সিডির মোড়ক উন্মোচন ও নজরুলের বিভিন্ন সময়ের গান, নৃত্য ও নাটক দিয়ে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চার দিনব্যাপী এই উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী। শিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসীর সভাপতিত্বে এতে অতিথি ছিলেন  নজরুল একাডেমির অধ্যক্ষ খালিদ হোসেন। স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মিন্টু রহমান। আজীবন সংগীত সাধনায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অনুষ্ঠানে সৈয়দ আবদুল হাদীকে প্রদান করা হয় নজরুল একাডেমির সম্মাননা। সৈয়দ আবদুল হাদীর হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি মুস্তাফা জামান আব্বাসী ও ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করেন মিন্টু রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আবদুল হাদী বলেন, নজরুল শুধু প্রেমের কবি-ই ছিলেন না, একাধারে তিনি প্রেম, দ্রোহ ও মানবতার কবি ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরি, আর এক হাতে রণতূর্য। এই উক্তিটি দিয়ে তিনি একই সঙ্গে দ্রোহ ও প্রেমের কথা বলেছেন। নজরুল শুধু এ দেশের নয়, সারা বিশ্বের বিস্ময় ছিলেন। ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা থেকে তিনি গানকে সর্বজনীনতায় রূপান্তরিত করেছেন। বাংলা গানের প্যাটার্ন ভেঙে ড্রইং রুম থেকে গানকে বাইরে নিয়ে এসেছেন। এ দেশের মুসলিম সমাজকে তিনি গান শোনাতে অভ্যস্ত করেছিলেন। স্বদেশি গানের সমালোচক রাজেশ্বর মিত্র পঞ্চকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ডি এল রায়, অতুল প্রসাদ সেন ও রজনীকান্তসহ সবার গানের প্রশংসা করলেও শুধু নজরুলের গানের প্রশংসা করতেই তিনি কুণ্ঠাবোধ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, জীবদ্দশায় নজরুলকে যেমন মূল্যায়ন করা হয়নি মৃত্যুর পরও তাকে সেভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এর আগে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও জাতীয় কবি রচিত কাব্য ‘আমপারা’ থেকে অনুবাদ করেন নজরুল একাডেমির অফিস সেক্রেটারি মো. রফিকুল আলম খন্দকার। আলোচনা-পরবর্তী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সমবেতভাবে নজরুলের গান পরিবেশন করে নজরুল একাডেমির শিল্পীরা। একক সংগীত পরিবেশন করেন সৈয়দ আবদুল হাদী, খালিদ হোসেন, রেবেকা সুলতানা, কনিকা নাজনীন, সিরাজুল ইসলাম, মো. আশরাফুল ইসলাম বাবু, চমন, করিম শাহাবুদ্দিন, তানজিনা করিম স্বরলিপি, মাহমুদা আনজুম বৃষ্টি, মঈদুল ইসলাম।

 সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন নজরুল একাডেমির ফেনী জেলা শাখার শিল্পীরা। একক নৃত্য পরিবেশন করেন নজরুল একাডেমি মোহাম্মদপুর শাখার শিল্পী নাদিয়া। এতে নজরুলের শিশুতোষ কবিতা ‘খুকি ও কাঠবিড়ালি’ অবলম্বনে নাটক মঞ্চায়ন করেন নজরুল একাডেমি বগুড়া জেলার শিল্পীরা। ২৭ মে শেষ হবে চার দিনব্যাপী এই নজরুল উৎসব।

শিল্পকলায় ‘বিবাদী সারগাম’

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে বাংলার তিন বীরসেনানী বিনয়, বাদল ও দীনেশের কলকাতা রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রাঙ্গণেমোর মঞ্চায়ন করেছে দলের ১১তম প্রযোজনার নাটক ‘বিবাদী সারগাম’।

গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়।

নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন শিশির রহমান।

বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রামিজ রাজু, মাইনুল তাওহীদ, বন্ধু তুহিন, রিগ্যান সোহাগ রত্ন, শুভেচ্ছা রহমান, সবুক্তগীন শুভ, লিটু রায়, আহমেদ সুজন, চৈতালী চৈতী, রাহুল, নিরঞ্জন নীরু, সুজন গুপ্ত, প্রীতি, মাহমুদুল হাসান, সোহাগ রহমান, স্বাধীন আরুশ, নূপুর, মিঠুন, উর্মিল, মৌসুমী মৌ, পরশ, বাঁধন সরকার প্রমুখ।

শিল্পকলায় কাল শুরু হচ্ছে ২০তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী ২০১৬

কাল বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী ২০১৬। ৪৬৪ জন নবীন শিল্পীর জমাকৃত ১০২০টি শিল্পকর্ম  থেকে বাছাইকৃত ১৮৮ জন শিল্পীর ২২৭টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হবে এই প্রদর্শনীতে। ছাপচিত্র, চিত্রকলা ও মিশ্র মাধ্যমসহ সব মাধ্যমে ১টি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ‘নবীন শিল্পী চারুকলা পুরস্কার ২০১৬’ ছাড়াও এতে থাকছে ৩টি বিষয়ে ৩টি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ও ৪টি সম্মাননা পুরস্কার। সব বিষয়ে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার বিজয়ী পাচ্ছেন গোল্ড মেডেল, এক লাখ টাকা ও সনদপত্র, তিনটি বিষয়ে তিনজন পাচ্ছেন ৭৫ হাজার টাকা করে ও সনদপত্র, সম্মাননা পুরস্কার পাচ্ছেন চারজন ৫০ হাজার টাকা করে ও সনদপত্র এবং যাদের শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে স্থান পাচ্ছে তারা সবাই পাচ্ছেন সনদপত্র। চূড়ান্ত পর্যায়ে বিচারকমণ্ডলী থাকবেন শিল্পী নাইমা হক, শিল্পী রণজিৎ দাস, শিল্পী গোলাম ফারুক বেবুল ও শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য। বিকাল ৫টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পক্ষকালব্যাপী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি সচিব আক্তারী মমতাজ এবং বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী রফিকুন-নবী। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা ও রমজান মাসে বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ৯ জুন শেষ হবে পক্ষকালব্যাপী এই প্রদর্শনী।

গতকাল দুপুরে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এই আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।

সংবাদ সম্মেলনে এ আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক উত্পল কুমার দাস ও প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক ইকবাল হোসেন।

সর্বশেষ খবর