রবিবার, ৩ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা
বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ

জাতীয় গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে জাতীয় গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে এবং সব প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। তারা বলছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জনগণকে আস্থায় নিয়ে সংকট উত্তরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। শুক্রবার রাতে রাজধানীর গুলশানে একটি রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার পর পৃথক বিবৃতি দেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও মহাসচিব মেজর  আবদুল মান্নান (অব.), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক, তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল, গণতান্ত্রিক বিল্পবী পার্টির মোশরেফা মিশু, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় কমিটির মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, ইউনাইটেড মুসলিম উম্মার অলি উল্লাহ, বিল্পবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল ইসলাম প্রমুখ । জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বিবৃতিতে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, শান্তিপ্রিয় এদেশে এমন নারকীয় হত্যাকাণ্ড কখনো যেন না হয়, সে জন্য সরকারকে আরও সচেতন হতে হবে। জাতীয় সংসদের বিরোধী দল-জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, এমন ব্যাপক, বেপরোয়া ও পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম।

একই সঙ্গে ক্রমাগতভাবে দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুরোহিত, পাদ্রি, সেবায়েত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমাদের অস্তিত্বকে হুমকির সম্মুখীন করে তুলেছে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের একটি জটিল সমস্যা সমাধানে দেশবাসীর ঐক্য জরুরি।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, এ হামলা জঙ্গিবাদীদের ঘৃণ্য বর্বর মানসিকতার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। এ হামলা বাংলাদেশসহ বিশ্ব শান্তি ও গণতন্ত্রের ওপর হামলা। গণতন্ত্র-উন্নয়ন-শান্তির ধারাকে ধ্বংস করে ভীতি ও আতঙ্কের মধ্যযুগীয় বর্বরতা কয়েমই এ ঘৃণ্য জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর মূল উদ্দেশ্য।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় গুপ্তহত্যা, টার্গেট কিলিংয়ের ধারাবাহিকতায় বিদেশি ষড়যন্ত্রের আরেকটি বহিঃপ্রকাশ ঘটল। তারা আরও বলেন, জঙ্গি গোষ্ঠীর এই বর্বর আক্রমণ ও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সব প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও মহাসচিব মেজর আবদুল মান্নান (অব.) বলেন, ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

গতকাল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির এক বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, সিপিবি-উদীচী-ছায়ানটে বোমা হামলা থেকে শুরু করে একের পর এক গুপ্তহত্যা দেশি-বিদেশি চক্রান্তেরই অংশ। জঙ্গিবাদবিরোধী জাতীয় গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীল দল, গণসংগঠন ও সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মিলে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক এক বিবৃতিতে বলেন, দেশি-বিদেশি লোকদের জিম্মি ও হত্যা করার মতো বর্বরোচিত ঘটনা দেশে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ভুলে জাতীয় সংলাপ, ঐক্য, জনগণের ভোটাধিকার এবং একটি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনিবার্য করে তুলেছে।

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া জাতীয় জীবনে এ জঘন্য ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও ধারা যেন ব্যাহত না হয় সেজন্য সব স্তরের মানুষকে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ আমাদের জাতীয় সমস্যা। এ সমস্যা মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু সফলভাবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তে কেনা স্বাধীনতা বিফল হতে দেব না। প্রয়োজনে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা আবার অস্ত্র হাতে তুলে নেব। এ জন্য সব মুক্তিযোদ্ধাকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর