মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজারের মহেশখালীতে দেশের প্রথম এলএনজি (লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) টার্মিনাল নির্মাণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার। এই টার্মিনাল নির্মাণের মাধ্যমে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে এলএনজি আমদানি করে দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর পেট্রো সেন্টারে এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে দুটি চুক্তি করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলা। চুক্তি দুটি হলো— কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল বাস্তবায়ন চুক্তি এবং টার্মিনাল ব্যবহার চুক্তি। প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার ঘন মিটার এলএনজি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন টার্মিনালটি থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, শিল্প ও বিদ্যুৎ উন্নয়নে আমাদের যে লক্ষ্য তাতে আরও তিন হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট নতুন গ্যাস লাগবে। এ লক্ষ্য পূরণ করতে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে। এর সঙ্গে গ্যাস আমদানি করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ভাসমান এই টার্মিনাল ছাড়াও ভূমিতে আরও ৪টি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এর বাইরে একাধিক ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব তাদের কাছে রয়েছে। প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, নতুন ১০৮টি কূপ ড্রিলিং করা হচ্ছে। এতে আমরা ভালো ফল পাব বলে আশা করছি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয় এলএনজি আমদানি করতে বছরে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১৫০ কোটি ডলার। আর এজন্য টার্মিনাল ভাড়া বাবদ বছরে দিতে হবে ৯ কোটি ডলার এবং কর ও ভ্যাট বাবদ দিতে হবে ২ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। ভোক্তা পর্যায়ে মূল্য সহনীয় রাখার লক্ষ্যে দেশে উৎপাদিত গ্যাসের সঙ্গে জবমধংরভরবফ খঘ ে(জখঘ)ে ব্লেডিং করে মূল্য নির্ধারণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদ। এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের লক্ষ্যে চুক্তি সই করেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার, পেট্রোবাংলার সচিব সৈয়দ আশফাকুজ্জামান এবং এক্সিলারেট এনার্জির প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তা ড্যানিয়েল বুসটাস।

জানা যায়, এক্সিলারেট এনার্জি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে। শেভরনের পর এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। এক্সিলারেট এনার্জি টার্মিনাল নির্মাণ করার পর বাংলাদেশে তা ১৫ বছর ব্যবহারের জন্য চুক্তি করেছে।

এর আগে আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে জ্বালানি সংকট মেটানোর জন্য মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল তৈরির উদ্যোগ নেয়। সে সময় নানা জটিলতায় এর নির্মাণ প্রক্রিয়া পিছিয়ে গেলেও দ্বিতীয় মেয়াদে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর মধ্যে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণকে অন্তর্ভুক্ত করে।

সর্বশেষ খবর