সোমবার, ২৫ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাজউক উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে পারেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাহিদা অনুযায়ী পুলিশ না পেয়ে রাজধানীর উত্তরা, গুলশান ও ধানমন্ডি এলাকায় পূর্বঘোষিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারেনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাজধানীর বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে রাজউকের নির্ধারিত একুশ দিনের কর্মসূচির প্রথম দিন ছিল গতকাল। এর আগে গত শনিবার আবাসিক এলাকার বিভিন্ন ভবনে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম দিনের অভিযানে নেতৃত্ব দিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার অলিউর রহমান, খন্দকার জাকির হোসেন ও মো. নাসির উদ্দিনকে নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে চাহিদা অনুযায়ী পুলিশ না পেয়ে ঘোষিত এই অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা যায়নি বলে জানিয়েছেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। স্বল্পতার কারণে ফোর্স দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আমরা সকাল থেকে সবকিছু নিয়ে প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু পুলিশ ফোর্স না পাওয়ায় অভিযান আর শুরু করা যায়নি। আমাদের অথরাইজড অফিসার, জোনাল অফিসার, লেবারসহ প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি প্রস্তুত ছিল।

 কী কারণে পুলিশ পাওয়া যায়নি তা এখনো ডিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। তিনি বলেন, আমরা কবে কবে পুলিশ ফোর্স পাবো এর একটি চিঠি ডিএমপি থেকে আজ (রবিবার) দেওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো আসেনি।

আরেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, আমরা পুলিশ ফোর্স চেয়ে ডিএমপি বরাবর চিঠি দিয়েছি। তারা সাধারণত রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে ফোর্স পাঠায়, একই সঙ্গে স্থানীয় থানাও এতে যুক্ত হয়। কিন্তু পুলিশের সহায়তা না পেলে এসব উচ্ছেদ অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। তাই সব প্রস্তুতি থাকলেও পুলিশ না থাকায় তা আর শুরু করা হয়নি।

এ বিষয়ে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সম্পর্কে আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু জানি না। চিঠি দেওয়া হয়েছে কি-না তাও জানি না। আমাকে মোবাইলেও ইনফর্ম করা হয়নি।

উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিধান ত্রিপুরা বলেন, এসব অভিযানের পুলিশ ফোর্স সেন্ট্রাল থেকে চাওয়া হয় এবং সেখান থেকে দেওয়া হয়। ডিভিশন থেকে কোনো পুলিশ দেওয়া হয় না। আর সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তাই হয়তো পুলিশ স্বল্পতার কারণে দেওয়া যায়নি।

জানা গেছে, উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুলিশ ফোর্স মোতায়েনের জন্য ডিএমপি পুলিশ কমিশনার বরাবর গত ১৮ জুলাই চিঠি পাঠায় রাজউক। রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) দুলাল কৃষ্ণ সাহা স্বাক্ষরিত চিঠিতে ২৪ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এক প্লাটুন সশস্ত্র পুলিশ এবং কিছুসংখ্যক নারী পুলিশ সদস্য মোতায়েনের অনুরোধ জানানো হয়।

গত ১ জুলাই গুলশানে জঙ্গি হামলার পর ঢাকার অভিজাত এ এলাকার অননুমোদিত স্কুল, কলেজ ও হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই মধ্যে ২০ জুলাই সারা দেশের শহর এলাকার আবাসিক প্লট ও ভবনে থাকা ১২ হাজার ৯৫৭টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে নোটিস দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আবাসিক এলাকায় তিন হাজার ১৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) এক হাজার ১৩৭টি এবং রাজউকের দুই হাজার ৪০০ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর