সোমবার, ১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

ডিএনএ রিপোর্টে আটকে আছে তনু হত্যা মামলা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার চার মাস ১২ দিন শেষ হলো গতকাল। চার মাসের বেশি সময়েও আশার আলো নেই তনু হত্যা মামলায়। মামলা এখনো আটকে আছে ১৬ মে প্রকাশ হওয়া ডিএনএ রিপোর্টে। তনুর কাপড়ে পাওয়া তিন পুরুষের শুক্রাণুর সঙ্গে সন্দেহভাজনদের ডিএনও মেলানোর কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। সিআইডি এক সময় সন্দেহভাজনদের ডিএনএ পরীক্ষার কথা বললেও এখন তারা মুখ খুলছেন না। তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘সিআইডি বলেছিল ঈদের পর তনুর মামলার অগ্রগতি হবে। ঈদের পর প্রায় এক মাসেও তেমন খোঁজখবর পাইনি। তনুকে সেনানিবাসের ভিতর হত্যা করা হয়েছে। সিআইডি সন্দেহভাজনদের তালিকাও করেছে। তাদের আটক করে ডিএনএ টেস্ট করলেই হত্যাকারী শনাক্ত হয়ে যায়। আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, হত্যাকারীরা সরকারের চেয়েও বেশি শক্তিশালী। মেয়ে হারিয়েছি। বিচারটা পেলে মনে শান্তি পাব। দেশের মানুষের সমর্থন ও মিডিয়ার সহযোগিতা না থাকলে এত দিনে মামলাটিও তনুর মতোই কবর দিয়ে দেওয়া হতো।’

তিনি বলেন, ‘দুই বছরের তনুকে নিয়ে সেনানিবাসের বাসায় এসেছিলাম। পাঁচ বছর বয়সে তাকে স্কুলে ভর্তি করি। বাসার খুঁটিনাটি তনু বাইরে থেকে কিনে আনত। বাসায় চারপাশে তার হাতের ছোঁয়া। মনে হয় তনু আমার চারপাশে ঘুরছে। তনুর আঁকা ছবি এখনো দেয়ালে ঝুলছে।’ তনুর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি কুমিল্লার পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিম বলেন, মামলার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে মামলার অগ্রগতি নিয়ে তিনি বিস্তারিত কথা বলতে রাজি হননি তিনি। ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার পাশের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২১ মার্চ কুমিল্লা মেডিকেলে তার প্রথম ময়নাতদন্ত করেন ডা. শারমিন সুলতানা। ওই দিন অজ্ঞাতদের আসামি করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন। ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ জেলার মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের কবর থেকে উত্তোলন ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৪ এপ্রিল দেওয়া হয় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন। ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত না থাকায় সমালোচনার মুখে পড়ে ফরেনসিক বিভাগ। ১৬ মে তনুর কাপড়ে তিন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়া যাওয়ার খবর সিআইডির কুমিল্লা অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খানের কাছ থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ফের আলোচনায় উঠে আসে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। ১২ জুন দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনেও তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত না থাকার কথা বলা হয়।

সর্বশেষ খবর