সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

গুলশানে হোটেল-রেস্তোরাঁ উচ্ছেদ স্থগিতের দাবি ব্যবসায়ীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি-সন্ত্রাসী হামলার পর গুলশান, বনানী, বারিধারা এলাকায় হোটেল-রেস্তোরাঁ উচ্ছেদে পরিচালিত অভিযান স্থগিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। তারা বলেছেন, গুলশানের সব হোটেল, গেস্টহাউস ও রেস্টুরেন্ট বৈধভাবে ব্যবসা করে। তারা নিয়মিত ট্যাক্স, কর ও সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়েই এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোনো হোটেল অবৈধ নেই। তাই দেশের কথা ভেবে ও উদ্যোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় প্রচলিত আইন পরিবর্তন করা হোক। এ জন্য এফবিসিসিআইর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনেরও দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল রাজধানীর মতিঝিলের ফেডারেশন ভবনে হোটেল-রেস্টুরেন্টস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) আয়োজিত যৌথ গোলটেবিল আলোচনায় ব্যবসায়ী নেতারা এ দাবি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মনজুর, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ব্যাংকারদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সহ-সভাপতি ও ঢাকা ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ। গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, আবাসিক এলাকায় হোটেল-রেস্টুরেন্টে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের কথা মন্ত্রিপরিষদে আলোচনা হয়েছে। এতে ধাপে ধাপে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। তিনি বলেন, দেশে পর্যটকদের থাকার পর্যাপ্ত কক্ষ নেই। এ কারণে হোটেল-রেস্টুরেন্ট তুলে দেওয়া হলে অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়বে। তিনি সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, অর্থনীতির স্বার্থে, পর্যটন ব্যবসার স্বার্থে, পোশাকশিল্পের স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা এলাকার হোটেল-রেস্তোরাঁ উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করতে হবে। তিনি এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ দাবি করেন। স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন চলমান উচ্ছেদ অভিযানের বিরোধিতা করে বলেন, গত ৪০ থেকে ৪৫ বছরে গড়ে ওঠা ভুলভ্রান্তি পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়। বিদ্যমান সমস্যা ধাপে ধাপে পরিবর্তন করা সম্ভব। রাজধানীকে আধুনিক আবাসস্থল গড়ে তোলার জন্য বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী করতে হবে। এমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ নাসিম মনজুর বলেন, শুধু গুলশান, বনানী ও বারিধারায় হোটেল-রেস্টুরেন্টে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ কোটি টাকাই ব্যাংকঋণ। এ পরিস্থিতিতে হঠাৎ এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলে বিনিয়োগকারীরা পথে বসবেন। তারা ঋণখেলাপি হয়ে পড়বেন। শ্রমিক বেকার হয়ে সমাজে অস্থিরতা বাড়বে। তিনি সরকারকে এ বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে চলমান উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানান। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ বলেন, হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দিলে পর্যটকরা কোথায় গিয়ে থাকবেন। দেশে আগত ৯৮ ভাগ পর্যটক আসেন ব্যবসার কাজে। এ ছাড়া এ খাতে শত শত কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে। রাতারাতি বন্ধ করে দিলে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর