বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভিক্ষা করা মুক্তিযোদ্ধা মিরন শেখকে স্বীকৃতি দেওয়ার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মিরন শেখকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। যশোরের কেশবপুরের মহাদেবপুর গ্রামের জোবেদ আলী শেখের ছেলে যুদ্ধাহত মিরন শেখ এখন ভিক্ষার মাধ্যমে জীবিকানির্বাহ করেন। যশোরের সাবেক এমপি সাখাওয়াত হোসেনসহ আটজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায়ের মধ্যে ট্রাইব্যুনাল তাকে স্বীকৃতি দানের এ নির্দেশনা দিয়েছেন। রায়ে মিরন শেখ সম্পর্কে ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের পবিত্র আকাঙ্ক্ষা এই যে— মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় যশোরের  কেশবপুরের মহাদেবপুর গ্রামের জোবেদ আলী শেখের ছেলে মিরন শেখের নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় যুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’ প্রসিকিউশনের বিভিন্ন সাক্ষীকে উদ্ধৃত করে রায়ে বলা হয়, মিরন শেখ একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের একজন ‘সোর্স’ ছিলেন। ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় মিরন তার বাঁ হাতের তিনটি আঙ্গুল দেখিয়ে বলেন, ভারতের তাকি হাসপাতালে চিকিৎসার সময় ডাক্তাররা তার দুটি আঙ্গুল কেটে ফেলেন। বর্তমানে তিনি ভিক্ষা করে জীবিকানির্বাহ করছেন। রায়ে আরও বলা হয়, ‘এটা বিস্ময়কর যে, একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নেই এবং জীবন ধারণের জন্য তাকে এখন ভিক্ষা করতে হয়। তিনি তার মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। ৪৫ বছর পর সেই রাষ্ট্রে প্রসিকিউশনের হয়ে সাক্ষ্য দিতে এসে তাকে বলতে হয়, তিনি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। তার নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় যুক্ত না হওয়ার কোনো কারণ আমরা খুঁজে পাইনি।’

রায়ের পর প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনাল মিরন শেখের কথা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এই মিরন শেখ ?যিনি যুদ্ধে এতখানি অবদান রেখেছেন, সেই লোক যদি আজ ভিক্ষা করে বেড়ায়, সেক্ষেত্রে সরকার ও জাতি তার জন্য কী পদক্ষেপ নিল! ট্রাইব্যুনাল অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করে প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দিয়েছে, এ ধরনের মুক্তিযোদ্ধা যারা রয়েছেন, বিশেষ করে মিরন শেখের জন্য যা করার তা করতে হবে। তার কাজের স্বীকৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের স্বীকৃতি যাতে আমরা দিতে পারি।

সর্বশেষ খবর