বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচন সহজ হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থিতার পথ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পথ সহজ করছে নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও দুটি ভাইস চেয়ারম্যান পদ দলীয় হওয়ায় তিনটি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় অন্তত ২০০-২৫০ জন ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রাখতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে উপজেলায় দলীয় প্রার্থীকে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয়ের সুযোগ রাখা হচ্ছে। বিধি লঙ্ঘনের জন্য দলকে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানারও প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। দলভিত্তিক উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা-২০১৬ এর সংশোধনে এসব প্রস্তাব রাখছে ইসি সচিবালয়। আজ বুধবার নির্বাচন বিধিমালা সংশোধন ও আচরণবিধি চূড়ান্তের বিষয়ে কমিশন সভা রয়েছে। এদিকে উপজেলার তিনটি পদ দলীয়ভাবে হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে ব্যালট পেপার ছাপানোর চ্যালেঞ্জ থাকবে বলে মনে করছেন ইসি কর্মকর্তারা। এক্ষেত্রে কয়েক ধাপে ভোট করা ছাড়া কোনো বিকল্পও থাকবে না। স্বতন্ত্র প্রার্থিতায় উপজেলার বিধি সংশোধনের বিষয়ে ইসি কর্মকর্তারা জানান, পৌরসভার চেয়ে উপজেলা পরিষদ আয়তন ও ভোটার সংখ্যা বেশি হওয়ায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে অন্তত ২৫০ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত সমর্থন তালিকা জমা দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যেহেতু পৌরসভায় ১০০ ভোটারের সমর্থন লাগে, উপজেলায় তার বেশি রাখাই যুক্তিযুক্ত। সিটি মেয়র পদে ৩০০ ভোটারের স্বাক্ষর লাগছে। এখন কমিশন আলোচনা করে দেড়শ, দুইশ বা তারও কম-বেশি রাখতে পারেন বলে জানান উপসচিব পর্যায়ের একজন ইসি কর্মকর্তা। ইসির কর্মকর্তারা জানান, দলীয় প্রার্থিতায় মনোনয়ন সংক্রান্ত প্রত্যয়ন লাগবে, উপজেলা প্রতি দলীয় ব্যয়সীমা নির্ধারণ, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রতীকের তালিকায়ও সংশোধন আনা হচ্ছে। সমালোচিত প্রতীকগুলোও সংরক্ষিত পদের জন্য রাখা হচ্ছে না। মন্ত্রী বা সমমর্যাদার ব্যক্তি, মেয়র, এমপিসহ সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের নির্বাচনী প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা রাখা হচ্ছে। ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের সর্বশেষ সাধারণ ভোট হয়েছে। দলভিত্তিক ভোটের জন্য আইন সংশোধনের পর বিধি করতে না পারায় কিছু উপজেলার ভোটও আটকে রয়েছে। বিধিমালা সংশোধনের পরই উপজেলার মেয়াদোত্তীর্ণ পদে ভোটও দলীয়ভাবে করা হবে। ইসির আইন শাখার যুগ্ম-সচিব মো. শাহজাহান বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনে আইনের আলোকে ইউপি ও পৌরসভার বিধি সংশোধন হয়েছে। সিটি করপোরেশনের বিধিও চূড়ান্ত হয়েছে। এখন উপজেলা বিধি দুটির খসড়া চূড়ান্তে প্রস্তাব উপস্থাপন করা হচ্ছে। কমিশন সার্বিক বিষয়ে আজ পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবে। সিটি মেয়র পদের চেয়ে কম ও পৌর মেয়র পদের চেয়ে বেশি সংখ্যক ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষরের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উপজেলার স্বতন্ত্র প্রার্থিতার শর্তারোপে কমিশনের কাছে উপস্থাপন করা হবে। চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যানের তিনটি পদের জন্য আলাদা সংখ্যক তালিকা রাখার বিষয়টিও আলোচনায় আসতে পারে।

গত নভেম্বরে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউপি ভোট দলভিত্তিক করতে আইন সংশোধন হয়। ডিসেম্বরে পৌরসভায় মেয়র পদে ও মার্চ-জুন পর্যন্ত ইউপির চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হয়। পৌর মেয়রে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১০০ ভোটারের সমর্থন লাগলেও ইউপিতে শর্তটি বাদ দেওয়া হয়। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, উপজেলা চেয়ারম্যান ও দুটি ভাইস চেয়ারম্যান (সাধারণ ও সংরক্ষিত) পদে নির্বাচনের জন্য প্রার্থীকে রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত অথবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে। তবে মহিলা সদস্য পদে নির্দলীয়ভাবে ভোট হবে।

সর্বশেষ খবর