সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
বাড্ডায় চার খুন

পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেফতার ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বাড্ডায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ চাঞ্চল্যকর চার খুনের মামলার প্রধান আসামি ও অন্য পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনায় ছিল মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ জুয়েল। গত শনিবার রাতে বাড্ডা ও গুলশানে অভিযান চালিয়ে জুয়েল ও তার সহযোগী মোজাহিদুল ইসলাম, সাফায়েত উল্লাহ সোহাগ, রাহাত হোসেন কাব্য, ইকবাল আহম্মেদ রানা ও শাহ পরান হোসেন রাজুকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ২টি পিস্তল ও ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিল ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজি। এদিকে, গতকাল ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মহানগর হাকিম এমদাদুল হকের আদালতে হাজির করে মামলায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত শুনানি শেষে প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ১৩ আগস্ট রাতে বাড্ডার আদর্শনগর পানির পাম্পের কাছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি করে অস্ত্রধারীরা। এতে ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ওরফে গামা, ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামসুদ্দিন মোল্লা, উত্তর বাড্ডার একটি হাসপাতালের সাবেক কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ ওরফে মানিক এবং রিকশা গ্যারেজের মালিক ও ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা আবদুস সালাম মারা যান। ওই ঘটনায় গামার বাবা মতিউর রহমান ১৪ আগস্ট বাড্ডা থানায় ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জুয়েল খুনের নেপথ্যে পরিকল্পনা, কারণ, হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের নাম ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রসহ সার্বিক বিষয়ে তথ্য প্রদান, হত্যাকাণ্ডের তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী অন্য পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। জুয়েল ঘটনার পর ভারতে পালিয়ে গিয়ে আত্মগোপনে ছিল।

মনিরুল ইসলাম বলেন, মধ্যবাড্ডা আদর্শনগর এলাকার জলিলের মালিকানাধীন স্টার গার্মেন্টের ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকার দুটি গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এক পক্ষের নেতা বাউল সুমন মারা যাওয়ার পর অন্য পক্ষ ওই গার্মেন্টের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে গেলে বিরোধ পাকাপোক্ত হয় এবং হত্যার ঘটনা ঘটে। ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও এলাকায় চাঁদাবাজি এবং আগে ঘটে যাওয়া কয়েকটি খুনও চার হত্যাকাণ্ডে নেপথ্য হিসেবে কাজ করেছে।

২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট রাতে বাড্ডার আদর্শনগর পানির পাম্পের কাছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি করে অস্ত্রধারীরা। ওই রাতেই মারা যান মাহাবুবুর রহমান গামা, সামসু মোল্লা, মানিক ও ছালাম। পরে এ ঘটনায় করা মামলায় নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিলে জুয়েলসহ অন্যদের নাম বেরিয়ে আসে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর