সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মর্গের সব ফ্রিজে জঙ্গির লাশ, বিপাকে ঢামেক

মির্জা মেহেদী তমাল

ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের সব ফ্রিজেই এখন জঙ্গির লাশ। সাধারণ মানুষের লাশ রাখার জায়গা আর হচ্ছে না। এ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা জঙ্গিদের এসব লাশ দ্রুত সরিয়ে নিতে পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাশ সংরক্ষণ নিয়ে ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ মহাবিপদে পড়েছে। গাদাগাদি করে লাশ রাখতে হচ্ছে ফ্রিজে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, মর্গে মরদেহ রাখার জন্য স্থান সংকট এখন তীব্র। প্রতিদিন স্বাভাবিক নিয়মেই মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য আসছে ৫ থেকে ৭টি করে মরদেহ। এগুলোও অনেক সময় সংরক্ষণে রাখার দরকার পড়ে। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতিতে লাশ রাখা যাচ্ছে না। মেঝেতে লাশ ফেলে রাখা হলে পচে বা ফুলে যায়। এতে আলামত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কলেজের অধ্যক্ষকে আমরা জানিয়েছি। অধ্যক্ষ পুলিশকে চিঠি দিয়েছেন। এখনো এ বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ সূত্র জানায়, লাশ সংরক্ষণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ফ্রিজ রয়েছে ৭টি। একটি ফ্রিজে ৪টি করে লাশ রাখা যায়। কিন্তু ৭টি ফ্রিজের ৪টি নষ্ট হয়ে আছে বহুদিন ধরে। বাকি ৩টি ফ্রিজে ১২টি লাশ রাখার জায়গা রয়েছে। আর এই ১২টির স্থানে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে ১৬টি লাশ। এর মধ্যে ১৩টি লাশ জঙ্গির। বাকি তিনটির মধ্যে একটি সাউথ আফ্রিকার নাগরিকের, একটি ভারতীয় এবং অপরটি বাংলাদেশি। সূত্র জানায়, জঙ্গিদের মরদেহ রাখতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) কর্তৃপক্ষ। মর্গের ভিতর এ পর্যন্ত রাখা হয়েছে ১৩ জঙ্গির মরদেহ। এর মধ্যে ৯ জঙ্গির মরদেহ পড়ে আছে ৪০ দিন ধরে। এদিকে প্রতিদিনই ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে আসছে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭টি মৃতদেহ। ফলে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কল্যাণপুরে নিহত ৯ জঙ্গির মরদেহ সরিয়ে নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছে ঢামেক কর্তৃপক্ষ। ফরেনসিক বিভাগের একজন চিকিৎসক জানান, প্রথমে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও চিঠি দেওয়া হয় মরদেহ সরিয়ে নিতে। কিন্তু এখনো তাদের কাছ থেকে কোনো জবাব পায়নি ঢামেক কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, এই মরদেহগুলো হস্তান্তর হলে অনেক জায়গা বেড়ে যাবে। জরুরি প্রয়োজনে মরদেহ রাখা যাবে। কিন্তু এখন সেই ব্যবস্থাও নেই। এদিকে ঢামেক থেকে চিঠি পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা চিঠি পেয়েছি। লাশগুলোর ডিসপোজাল কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন। কিন্তু যেহেতু এখনো এ বিষয়ে মামলা চলছে তাই বিষয়টি তদন্তকারী সংস্থার এখতিয়ারে। তারাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত  নেবেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর