শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাজধানীর খাল ও সেপটিক ট্যাংকে দুই শিশুর লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর সবুজবাগ থেকে গতকাল দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ওয়াসার খাল এবং সেপটিক ট্যাংকে এ দুই শিশুর লাশ পাওয়া যায়। তারা হলো শামীম হোসেন (১২) ও সায়িখ সাদাত ইফতি (৬)।

পুলিশ জানিয়েছে, শামীমের লাশ ওয়াসা রোডের খালে এবং ইফতির লাশ আলহাজ আবদুর রশিদ মাতবর রোডের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে পাওয়া যায়। ইফতির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেজাউল নামে এক দোকানদারকে আটক করা হয়েছে। শামীমের বাবা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক শফিকুল ইসলাম জানান, তার ছেলে শামীম কমলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সে বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় পা পিছলে ওয়াসা রোডের খালে পড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তাকে উদ্ধারে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। গতকাল সকালে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল আবার খোঁজ শুরু করে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শামীমের লাশ পাওয়া যায়।’ শামীমকে হারিয়ে পুরো পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

স্কুলছাত্র শামীম পড়ে যাওয়ার সময় প্রত্যক্ষদর্শী শিশু সখিনা জানায়, সে বাসার সামনে ওয়াসার খালের পাশে একটি খালি ট্রাকে উঠে খেলা করছিল। এ সময় আরও কয়েকজন ছেলে সেখানে খেলতে আসে। তারা ময়লার স্তূপের ওপর দিয়ে ওয়াসার খাল পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় একজন খালের পানিতে পড়ে গেলে অন্য ছেলেরা দৌড়ে দ্রুত চলে যায়। পানিতে পড়ে যাওয়া ছেলের দুই হাত তুলতে দেখে সখিনা ট্রাক থেকে নেমে স্থানীয়দের খবর দেয়। সবুজবাগ থানার এসআই জিয়াউর রহমান জানান, শামীম পরিবারের সঙ্গে বাসাবো এলাকার ওহাব কলোনিতে থাকত। তাদের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী থানার বাগাদি গ্রামে। মৃত শামীম দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়। তার ছোট ভাইয়ের বয়স দুই মাস। এ ছাড়া আরেক শিশু ইফতির খালা হনুফা বেগম বলেন, ইফতির বাবা ইব্রাহিম খলিল ও মা সামিদা। ইফতির চার বছর বয়সী ছোট বোন ইমু। ইব্রাহিম ঢাকার দোহারে পিডব্লিউডিতে চাকরি করেন। পিডব্লিউডির কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে থাকেন। সেখানের একটি স্কুলে নার্সারিতে পড়ত ইফতি। গত মঙ্গলবার খিলগাঁও থানার শেখের জায়গায় পরিবারের সঙ্গে নানা বাড়িতে বেড়াতে আসে ইফতি। গত বৃহস্পতিবার সকালে ইফতি নিখোঁজ হয়। তার সন্ধান পেতে শেখের জায়গার খালসহ সম্ভাব্য অনেক জায়গায় খোঁজা হয়। পরে সবুজবাগ থানায় একটি জিডিও করা হয়। গতকাল সকাল ৮টার দিকে আলহাজ আবদুর রশিদ মাতবর রোডের একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে তার লাশ পাওয়া যায়। ওই সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা ছিল না। স্থানীয় আজহারুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থল বাড়ির সামনে কয়েকজন ছেলে খেলা করছিল। বাড়িটির চারদিকে দেয়াল ও মেইন গেট সব সময় তালা লাগানো থাকত। কয়েকজন ছেলে গেট টপকে বাড়ির ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। ধমক দিলে তারা চলে যায়। ওই বাড়িতে রাস্তা সংলগ্ন একটি বেডরুম ও একটি মুদিদোকান রয়েছে। এর পেছনে ছিল সেপটিক ট্যাংক। কেউ ধারণা করেনি ওই ট্যাংকে ইফতি পড়ে গেছে। গতকাল সকালে এক শিশু ওই ট্যাংকে ইফতির লাশ দেখতে পায়।  সবুজবাগ থানার এসআই বাবর সরকার জানান, শিশু ইফতির মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুদিদোকানদার রেজাউলকে আটক করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর