শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

১০ টাকার চালে হতদরিদ্রদের সর্বনাশ, ধনীদের পোয়াবারো

প্রতিদিন ডেস্ক

সরকারের ‘খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচি’র আওতায় হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য ১০ টাকা কেজির চালে ধনী, বিত্তশালী ও প্রভাবশালীদের পোয়াবারো অবস্থা চলছে। প্রকৃত হতদরিদ্রদের ফাঁকি দিয়ে এরা হাতিয়ে নিচ্ছেন সরকারি এ সুবিধা। বিভিন্ন স্থান থেকে এসব নিয়ে নানা অভিযোগ অনবরত আসছেই।

দালান-কোঠার মালিকরাও হতদরিদ্র : নওগাঁ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ নিয়ে নওগাঁয় নানা অনিয়ম চলছে। উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার হতদরিদ্র পরিবারের ৯৯৪ জনের একটি তালিকা করে উপজেলা খাদ্য অফিসে দেওয়া হয়েছে। হতদরিদ্রের এই তালিকায় নাম রয়েছে চেয়ারম্যান-মেম্বার, ক্ষমতাসীন দলীয় নেতা-কর্মী, বিত্তশালী এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের। একই পরিবারের একাধিক সদস্যের নামেও চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, হতদরিদ্রের তালিকায় নাম রয়েছে আধাইপুর ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের সত্যপাড়া গ্রামের রিংকোন হোসেনের, যার পাকা বাড়ি ও ৮/১০ বিঘা জমি, একটি বড় মুদি দোকান ও একটি রাইস মিল রয়েছে। স্বজনপ্রীতি করে তাকে কার্ড দিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার সাবিনা ইয়াসমিন। এ ছাড়াও তিনি তার আপন দেবর বেগুনজোয়ার গ্রামের উজ্জ্বল হোসেনের নামে কার্ড দিয়েছেন, অথচ তার দোতলা পাকা বাড়ি ও ৭ বিঘা জমি রয়েছে। একই উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাপুর গ্রামের আবদুল গফুর মণ্ডলের ছেলে গোবরচাঁপা বাজারের ব্যবসায়ী এবং বিলাসবহুল দ্বিতল ভবনের মালিক আমিনুর রহমান ওরফে পটুর নামেও হতদরিদ্রের কার্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া একই উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউপির ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হলুদ বিহার গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দুলুর বাবা গিয়াস উদ্দিন এবং মা জাহেরার নামে কার্ড দেওয়া হয়েছে। অথচ গিয়াস উদ্দিনের বয়স্ক ভাতার কার্ড রয়েছে। একই গ্রামের কার্ড পাওয়া আদমের রয়েছে ইটের পাকা বাড়ি এবং জমিজমা রয়েছে প্রায় ছয় বিঘা। এ ছাড়া কার্ড পেয়েছেন রিপন, যার পাকা বাড়ি এবং জমি রয়েছে প্রায় ১২ বিঘা। দরিদ্রের কার্ড পেয়েছেন কোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফিরোজ আলম এবং দ্বীপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জিয়া। একই সঙ্গে কার্ড পাওয়া কাশিমালা গ্রামের বেগম, সানজিদা, উজ্জ্বল, রাসেল, কিনা, আলাউদ্দিন, রশিদ, ফজলুর পাকা বাড়ি আছে এবং তারা চাকরিও করেন। কার্ড পাওয়া দুধকুড়ি গ্রামের মানিক হোসেন ও নুরুজ্জামানও সচ্ছল পরিবার এবং তাদের পাকা বাড়ি আছে। প্রাপ্ত অভিযোগ অনুযায়ী, ১০ টাকা কেজির চাল পেতে হতদরিদ্রের তালিকায় যাদের একাধিক নাম রয়েছে তারা দুবার করেও চাল নিয়েছেন। ভুয়া নামের কার্ড ব্যবহার করেও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য ও দলীয় নেতা-কর্মীরা চাল উত্তোলন করছেন।

হলুদ বিহার গ্রামের হতদরিদ্র লুত্ফর রহমান বলেন, ‘জোড়াতালি দেওয়া টিনের ছাপড়ার ঘরে থাকি। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি ও ছোট মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়িয়েছি। অন্যের বাড়িতে দিনমজুরির কাজ না করলে দিন চলে না। অথচ আমার মতো অনেককেই ১০ টাকা কেজি দরে চালের কার্ড না দিয়ে যারা চেয়ারম্যান ও মেম্বারের পিছনে কাজ করেছেন, তাদের কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।’ বিলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান কেটু বলেন, ‘আমি বিরোধী দলের চেয়ারম্যান। দায়িত্ব গ্রহণ করার পর এক হাজার জনের একটি তালিকা পেয়েছি। এটা আগের চেয়ারম্যান তৈরি করেছিলেন। সেখানে তাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের নাম রয়েছে। কার্ড দেওয়ার নামে তারা অনেকের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়েছেন বলে শুনেছি। তারা অনুরোধ করায় তালিকায় স্বাক্ষর করেছি। তাই তালিকা থেকে অধিকাংশ প্রকৃত হতদরিদ্র বাদ পড়েছেন।’

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক ড. মো. আমিনুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকারের নির্দেশে এরই মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ বা কোনো ধরনের অনিয়ম করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুসাইন শওকত জানান, ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ করার সময় তিনি উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের দাড়িশন গ্রামের ডিলার ওবায়দুর রহমানের দোকানে গিয়ে চাল কম দেওয়ার সত্যতা পেয়েছেন এবং এ জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ ছাড়াও ওই ডিলারের চাল ওজন দানকারী রুহুল আমিনকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ভুয়া কার্ডে চাল চুরি : কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, দৌলতপুর উপজেলার খাস মথুরাপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শেখপাড়া গ্রামের রাহাজান, স্বামী সুরাত আলী। রাহাজানের নামে ১০ টাকা দরে চালের কার্ড করা হয়েছে। কার্ডের বিপরীতে চাল উত্তোলন ও বিতরণও দেখানো হয়েছে। অথচ রাহাজান কিছুই জানেন না। একই গ্রামের রেফাত আলীর স্ত্রী কহিনুরের নামেও কার্ড হয়েছে। সেই কার্ডের বিপরীতে চাল উত্তোলনও হয়েছে। কিন্তু কহিনুর জানেন না এ খবর। একই অবস্থা রিফাতেপুর ইউনিয়নেও। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হরিণগাছী গ্রামের মসলেম মালিথা ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রিফাইতপুর গ্রামের নজির উদ্দীনের নামে কার্ড তৈরি করে চাল বিতরণ দেখানো হয়েছে। অথচ তিনি নিজে এক কেজি চালও পাননি। এ ছাড়াও দুস্থদের তালিকায় নাম দেখানো হয়েছে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুল হোসেন ও ভাদু শেখের। এরা হার্ডওয়ার ও মুদি ব্যবসায়ী। সরেজমিন ঘুরে এমন অসংখ্য অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে।

 এসব অনিয়মের মাধ্যমে দুস্থদের মাঝে বিতরণের নাম করে প্রথম দফায় সরকারি গোডাউন থেকে উত্তোলিত চালের অধিকাংশই আত্মসাৎ করে কালোবাজারে বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার অন্য ১২টি ইউনিয়নের কিছু কিছু জায়গায় কম-বেশি চাল বিতরণের খবর পাওয়া গেলেও চালপ্রাপ্তরা দুস্থ নন। বরং অধিকাংশই চেয়ারম্যান বা ডিলারদের আত্মীয়স্বজন। এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগও করা হয়েছে। ফলে দুই ইউনিয়নে চাল বিতরণ স্থগিত করা হয়েছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, গত ২৯ সেপ্টেম্বর রিফায়েতপুর ও খাস মথুরাপুর ইউনিয়নে নিজ নিজ ইউনিয়নের কার্ডধারী দুস্থদের মাঝে ১০ টাকা দরে চাল বিতরণের জন্য দৌলতপুর খাদ্য গোডাউন থেকে চাল উত্তোলন করেন সংশ্লিষ্ট ডিলাররা। এরপর তারা এসব চাল এলাকায় না নিয়ে চেয়ারম্যানদের তত্ত্বাবধানে বিক্রি করে দেন। কার্ডধারীদের অনেকে জানেন না কবে চাল উত্তোলন ও বিতরণ করা হয়েছে। কার্ডে ভুয়া টিপসই বসিয়ে এসব চাল বিতরণ দেখানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, খাদ্য কর্মকর্তা, ট্যাগ অফিসার ও ডিলাররা যোগসাজশ করে এসব চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

আরও জানা গেছে, এ দুই ইউনিয়নে ১৯৩ জন করে মোট ৩৮৬ জনের নামে কার্ড রয়েছে। দুস্থদের নামে কার্ড দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও কার্ডপ্রাপ্তদের অধিকাংশই সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা ডিলারের আত্মীয় অথবা অনুগত এবং এরা সবাই সচ্ছল। এদের কেউ ব্যবসায়ী, কেউ দোকানদার। কারও ট্রাক্টর ও দালান বাড়ি রয়েছে।

দৌলতপুর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা লিয়াকত আলী বলেন, ‘প্রথম দফার (সেপ্টেম্বর মাসের) চাল গোডাউন থেকে ছাড় করা হয়েছে। চাল বিতরণ যথাযথ হয়নি—এ কথা শোনা যাচ্ছে। তবে কেউ সেই চাল আত্মসাৎ করলে দায়ভার তারা নিজেরাই ভোগ করবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘অনিয়মের বিষয়ে আমিও অভিযোগ পেয়েছি। এরই মধ্যে খাস মথুরাপুর ও রিফায়েতপুর ইউনিয়নের চাল বিতরণ স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুজিব-উল ফেরদৌস বলেন, ‘চাল বিতরণের জন্য গঠিত কমিটিতে জেলা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তাকে রাখা হয়নি। এ কারণে আমরা চাইলেও বিষয়টি সেভাবে মনিটরিং করতে পারছি না।’

টাকার বিনিময়ে কার্ড, ওজনে কম : মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে টাকার বিনিময়ে এবং স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে কার্ড বিতরণ করা এবং চাল দেওয়ার সময় মাপে কম দেওয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও এক মাসের চাল দিয়ে কার্ডে দুই মাস এন্ট্রি করা হয়েছে। এ নিয়ে কার্ডধারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর একটি মহতী উদ্যোগ সফল বাস্তবায়ন না হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, জেলার ৬০ ইউনিয়নের মধ্যে বেশকিছু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মহিলা মেম্বাররা দরিদ্রদের পাশাপাশি তাদের নিকটাত্মীয়দের মধ্যে কার্ড বিতরণ করেছেন। ফলে অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের অনেকেই দরিদ্র কার্ড পেয়েছেন। রাজৈর ও শিবচরে ডিলাররা চাল বিক্রির সময় মাপে কম দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সদর ও কালকিনির ইউনিয়নগুলোর অবস্থা একই রকম। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ কালকিনি নবগ্রাম ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডে সাড়ে ৯০০ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। প্রত্যেক কার্ডধারীর কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ২০০ করে টাকা। সাড়ে ৯শ’ কার্ডের বিনিময়ে আদায় করা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এ ইউনিয়নে ডিলাররা সেপ্টেম্বর মাসের চাল বিতরণকালে প্রতিকার্ডে ২/৩ কেজি করে চাল মাপে কম দিচ্ছেন।

নবগ্রাম ইউপির উত্তর চলবল এলাকার সুধন্য বাড়ৈ বলেন, ‘৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার অরুণ মল্লিক কার্ড দেওয়ার সময় আমার কাছ থেকে ২শ’ টাকা নিয়েছেন। শুধু আমার একার কাছ থেকেই নয়, সবার কাছ থেকে মেম্বার ও মহিলা মেম্বাররা ২শ’ করে টাকা নিয়েছেন। ডিলারের কাছ থেকে ৩শ টাকা দিয়ে গত মাসে ৩০ কেজি চাল এনেছি, বাড়ি এসে মেপে দেখি ২৭ কেজি।’ এ এলাকার উত্তম সরকার, কেশব ঢালী, সুশীল বাড়ৈ, মনিন্দ্র বাড়ৈ, সুখদেব বাড়ৈসহ অনেকেই একই অভিযোগ করেছেন।

খোয়াজপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মুন্সী ‘চাল বিতরণে অনিয়ম হচ্ছে না’ দাবি করে বলেন, ‘হতদরিদ্রদের মাঝে চাল বিতরণে কোনো অনিয়ম আমার এলাকায় এখনো হয়নি। আমার অজান্তে যদি কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. তানভীর আহমেদ বলেন, ‘এ পর্যন্ত কেউ আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমার অফিসে অভিযোগ বাক্সও খোলা হয়েছে।’

চাল নিয়ে ঠেলাঠেলি : দিনাজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হতদরিদ্র ও দুস্থদের ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রির তালিকা প্রণয়নে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার একে অপরকে দোষারোপ করছেন। স্থানীয়রা জানান, হতদরিদ্র ও দুস্থদের তালিকা প্রণয়নে ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের দ্বন্দ্বে গোটা বিতরণই থমকে গেছে। দ্বন্দ্বে দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা। ফলে গত সেপ্টেম্বর মাসে ঐ ইউনিয়নের দুস্থরা চাল পাননি। এ ব্যাপারে ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাবলু জানান, তার ভাই হতদরিদ্র কিংবা দুস্থ নন। তারপরও তার নাম তালিকায় দেখে তিনি সেটি কেটে দেয়ার জন্য চেয়ারম্যান ও সচিবকে বলেছেন। তারপরও কীভাবে তালিকায় তার নাম আছে—তা তার জানা নেই। তবে তার ভাই চাল তুলবে না।

ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ চৌধুরী বিপ্লব বলেন, ‘কিছু ইউপি সদস্য প্রকৃত হতদরিদ্র ও দুস্থদের নামের তালিকা না দিয়ে নিজেদের পছন্দের লোকজন যারা হতদরিদ্র কিংবা দুস্থ নয়, এমন সব লোকের নামের তালিকা দিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে থেকে কিছু কেটে প্রকৃত ব্যক্তিদের তালিকা করা হয়েছে। এরপরও ইউপি সদস্যদের দেওয়া তালিকাগুলোতেই চাল দিতে গিয়ে অনিয়মগুলো ধরা পড়ছে। বিষয়গুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

এদিকে গতকাল দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর (পুরাতন বন্দর) এলাকায় চাল বিক্রি পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পাওয়ায় ৪টি কার্ডের চাল বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এহেতেশাম রেজা। যাদের কার্ডের চাল সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে তারা হলেন ওই ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের মজিবর রহমান (কার্ড নং ৬৭৯৬), একই ওয়ার্ডের রিপন চন্দ্র (কার্ড নং ৬৮৫১), ৯ নং ওয়ার্ডের আবদুস সাত্তার ডিসি (কার্ড নং ৬৯৮৯) ও একই ওয়ার্ডের বিপ্লব (কার্ড নং ৭৯৯৬)। ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বাবলুর ভাই হাইকুল ইসলাম হতদরিদ্র কিংবা দুস্থ না হলেও তার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কার্ড। যার নং ৬৯৭৪।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর