রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সুরের সমুদ্রে সম্মেলন

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

সুরের সমুদ্রে সম্মেলন

সুর আর নান্দনিক নৃত্যে উদ্দীপ্ত ছিল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলন। জনসমুদ্র যেন সুরের সমুদ্রে ভাসছিল। বিভিন্ন সংগীত দলের শিল্পীদের কণ্ঠে জাতীয় সংগীত দিয়ে শুরু হয় এ আয়োজন।

জাতীয় সংগীতের পর কবি কামাল চৌধুরীর লেখা ও বাপ্পা মজুমদারের সুরে শিল্পীরা গেয়ে শোনান উৎসবসংগীত ‘এখন সময় বাংলাদেশের/এখন সময় আমাদের’। ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’, ‘মানুষ ভজলে সোনার’ ও ‘সন্ত্রাসের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে শিশু শিল্পীরা। এরপর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা সমবেতভাবে গেয়ে শোনান ‘ধন ধান্য পুষ্পে ভরা’ ও ‘নোঙর তোলো তোলো’। প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পীদের কণ্ঠে ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’ ও ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে’ গানের সঙ্গে নাচের রিনিঝিনি ধিনাক ধিনাক মুদ্রার তাল ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে আরও প্রাণবন্ত এবং উদ্দীপ্ত করে তোলে। সংগীতের এ মূর্ছনা আর নাচের মুদ্রা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লক্ষাধিক রঙিন বাতির আলোকেও ম্লান করে দেয়।

অনুষ্ঠানে একক আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী আহ্্কামউল্লাহ, ঝর্না সরকার। দ্বৈত কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন সাজেদ আকবর ও সালমা আকবর। একক সংগীত পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী তিমির নন্দী, মনোরঞ্জন ঘোষাল, শিল্পী ও সংসদ সদস্য মমতাজ, খায়রুল আনাম শাকিল, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, রথীন্দ্রনাথ রায়, দিনাত জাহান মুন্নী, কণা সোমনুর মুনীর কোনাল, পারভেজ আহমেদ, শফি মণ্ডল ও মেহেদী হাসান। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন মুনমুন আহমেদ ও তার দল এবং এম আর ওয়াসেক ও তার দল। বান্দরবানের বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর সম্মিলিত পরিবেশনায় মনোজ্ঞ এ আয়োজনে আরও অংশ নেয় বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক একাডেমি। গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর পরিবেশন করেন সৈয়দ শামসুল হক রচিত ‘এ সূর্যের উদয়ের পথ, শহীদের খুনে লাল’ ও মুহাম্মদ সামাদের লেখা ‘মুজিব আমার স্বপ্ন-সাহস, মুজিব আমার পিতা’ গান দুটি। কোনাল পরিবেশন করেন ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ ও ‘উড়ছে শান্তির পায়রা’ গান দুটি। এ ছাড়া বর্তমান সময়ের আলোচিত ব্যান্ডদল জলের গানের শিল্পীরাও তাদের পরিবেশনায় সম্মেলনস্থল মাতিয়ে রাখেন। সাংস্কৃতিক পর্বের উপস্থাপনায় ছিলেন শমী কায়সার, ডা. নুজহাত চৌধুরী, আসলাম শিহির, মিজানুর রহমান সজল, আনজাম মাসুদ ও শাহাদাৎ হোসেন নিপু। প্রায় আড়াই ঘণ্টার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সম্মেলনকে নতুন আলোয় আলোকিত করে, শৈল্পিকতার সুষমা ছড়িয়ে দেয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে আশপাশের রাস্তায়ও। এ সময় সারা দেশের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগ করেন বিদেশ থেকে আগত অতিথিরাও।

শিল্প প্রদর্শনী : আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে চারটি বিশেষ স্থাপনাশিল্প প্রদর্শন করছে দলটির গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনস্থলের পাশে আলোকচিত্রের মাধ্যমে স্থাপনাশিল্পগুলো তুলে ধরা হয়েছে। চারটি স্থাপনাশিল্পের শিরোনাম— ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা (১৯৪৯-২০০৮)’, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য সংগ্রাম (১৯৮১-১৯৯৬)’, ‘ছবিতে বঙ্গবন্ধু’ এবং ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ’। আলোকচিত্রের মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক নানা ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে সম্মেলনে আগতদের জন্য। আজও এ স্থাপনাশিল্প প্রদর্শনী চলমান থাকবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর