রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

আগ্রহ কম স্মার্টকার্ডে, বেশি অর্ধেক বিতরণ বাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগ্রহ কম স্মার্টকার্ডে, বেশি অর্ধেক বিতরণ বাকি

রাজধানীতে উন্নতমানের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে ২০ দিন পার হয়েছে। এরই মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রমনা এলাকার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড ও সেগুনবাগিচা এলাকার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিতরণ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উত্তরার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিতরণও শেষ হয়েছে কাল।

প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা উত্তরে উত্তরার ১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৪৫ শতাংশ, ঢাকা দক্ষিণে ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডে গড়ে ৪২ শতাংশ কার্ড ইতিমধ্যে বিতরণ হয়েছে। দক্ষিণ সিটির ২১ নম্বর ওয়ার্ডে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে গতকাল। তবে চলছে ঢিমেতালে। ইসির কর্মকর্তারা জানান, নানা জটিলতার মধ্যে মহানগরে তিনটি ওয়ার্ডের লক্ষাধিক ভোটারের মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধলাখ স্মার্টকার্ড বিতরণ হয়েছে। পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রমে যত সমস্যা চিহ্নিত হচ্ছে, তা শনাক্ত করে পরবর্তীতে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তবে বিতরণ শুরুর আগে স্মার্টকার্ডের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও নাগরিকরা কার্ড নিতে এসেছেন কম।

তিন সমস্যায় নির্দেশনা নেই : ইসির কর্মকর্তারা মনে করছেন, ঢাকা মহানগরে স্মার্ডকার্ড বিতরণ কেন্দ্রে নাগরিকদের অনুপস্থিতিই বেশি। তারা কবে নাগাদ এ কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন তা জানাতে পারছে না ইসি। পাশাপাশি যাদের স্মার্টকার্ড সংশোধনের প্রয়োজন পড়ছে এবং নানা অসংগতিতে কার্ড সংগ্রহ করতে পারেননি, তাদের সমস্যা নিয়ে পদ্ধতিগত বিলম্ব হতে পারে বলে মাঠ কর্মকর্তারা বলছেন। ‘নামের বানানের ভুল’ নিয়ে স্মার্টকার্ড হাতে পেলেও সংশোধনের জন্য কী পদ্ধতি হবে এবং তা কবে সংশোধন হবে; এ ছাড়া যারা স্মার্টকার্ড পাননি তারা কবে পাবেন এবং যাদের বাড়িতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেওয়ার কথা তাদের কবে জানানো হবে— এমন তিনটি সমস্যা নিয়ে এখনো নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা না পাওয়ায় বিপাকে মাঠের নির্বাচন কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, যারা স্মার্টকার্ড নিচ্ছেন তারা তথ্য সংশোধন করতে গেলে শিগগিরই ডুপ্লিকেট স্মার্টকার্ড পাবেন না। কবে নাগাদ পাবেন তাও বলা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন অফিসে কেউ সংশোধনের আবেদন করলে তথ্য সংশোধন হবে ডাটাবেজে। প্রয়োজনে ল্যামিনেটেড সংশোধিত কার্ড নিতে পারেন তারা।

২০১৪ সালে যারা ভোটার হয়েছেন তারা সরাসরি স্মার্টকার্ড পাচ্ছেন এখন। তাদের হাতে ১৩ ডিজিটের কিংবা ১৭ ডিজিটের ল্যামিনেটেড এনআইডি নেই। সে ক্ষেত্রে ১০ ডিজিটের স্মার্টকার্ড সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করলে তা যাচাইয়েও কারিগরি সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। যারা বিতরণ কেন্দ্রে গিয়ে নানা জটিলতায় স্মার্টকার্ড নিতে পারেননি, তাদের বাড়িতে পরে তা পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের তিনটি ওয়ার্ডে সাড়ে সাত হাজার নাগরিকের এমন অভিযোগ পেয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। যারা বিতরণ কেন্দ্রেই আসেননি তারা কবে নাগাদ উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসে কার্ড নিতে পারবেন সে বিষয়েও নির্দেশনা নেই।

জানা গেছে, উত্তরায় ৫১ হাজারের বেশি ভোটারের মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার নাগরিক স্মার্টকার্ড পেয়েছেন। চার হাজারেরও বেশি নাগরিক নানা অসংগতির কারণে কার্ড নিতে পারেননি। আর বাকিরা আসেননি বিতরণ কেন্দ্রে। রমনা থানার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ২৫ হাজার ৫১০ জন ভোটারের মধ্যে ১০ হাজার ৭০১ জন কার্ড নিয়েছেন। নিতে পারেননি এক হাজার ২৩৩ জন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডেও ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ নাগরিক বিতরণ কেন্দ্রে আসেননি। ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভাসমান ও স্থানান্তরিত ভোটারের কারণে ভোটার অনুপস্থিতি বেশি। বিতরণ কাজ নিয়ে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রচারণাও ছিল কম। সব মিলিয়ে সমন্বয়হীনতা ছিল বেশি।

ঢাবিতে ঢিমেতালে বিতরণ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ক্যাম্পে ঢিমেতালে চলছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড বিতরণের কাজ। গতকাল সকাল ১০টার দিকে শুরু হয়েছে ঢাবি ও আশপাশ এলাকার ভোটারদের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ। তবে বিতরণ শুরুর পর থেকেই ভোটারদের তেমন সাড়া পড়েনি। অথচ এ এলাকায় বিতরণ বেশি হবে বলেই ধারণা নির্বাচন কমিশনের। দেখা গেছে, ইসি নিয়োজিত অপারেটররা আয়েশি ভঙ্গিতেই কাজ করছেন। ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকায় চাপ কম বলে জানাচ্ছেন তারা। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। এ ক্যাম্পে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত কার্ড দেওয়া হবে। তাই সময় শেষ হলেই বোঝা যাবে টার্ন আউট।

সর্বশেষ খবর