শিরোনাম
শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা
৮ হাজার ৫২৫ কোটি টাকার অডিট আপত্তি

নথি গায়েব, গুলশানের অবৈধ প্লট উদ্ধার করা যাচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৫২৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অডিট আপত্তি উঠেছে। এ ছাড়া রাজউক থেকে নথি গায়েব হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও সংসদীয় কমিটির কাছে তারা স্বীকার করেছে। আর নথির অভাবেই রাজধানীর গুলশানের অবৈধ প্লট উদ্ধার বা এর মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলে দাবি রাজউকের। তবে কোন কোন প্লটের নথি গায়েব হয়েছে এর কোনো তালিকা তারা সংসদীয় কমিটির কাছে তুলে ধরতে পারেনি। সংসদ ভবনে গতমঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা যায়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি শওকত আলী। বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, হাবিবুর রহমান, আবদুর রউফ ও নাভানা আক্তার। বৈঠকে জানানো হয়, রাজউকের বিগত পাঁচ বছরের সার্বিক কার্যক্রমে বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনায় ১ হাজার ৬২৬টি অডিট আপত্তি উঠেছে। এতে সরকারের ৮ হাজার ৫২৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অডিট আপত্তি রয়েছে। এর মধ্যে আর্থিক বিধি অনুসরণ না করায় ১৬৩টি অডিটের সঙ্গে জড়িত অর্থের পরিমাণ ৫ হাজার ৩৯৭ কোটি ৮৫ হাজার টাকা। যথাশিগগির সম্ভব অডিট আপত্তিগুলো নিষ্পত্তি করার বিষয়ে সুপারিশ করে কমিটি। বৈঠকে আরও জানানো হয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১২টি প্রকল্প চলমান আছে। এর মধ্যে পাঁচটি বৈদেশিক সহায়তা প্রকল্প। কমিটি নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার সুপারিশ করেছে। কমিটির কার্যপত্র থেকে জানা যায়, বৈঠকে কমিটির সভাপতি শওকত আলী বলেছেন, ফাইল যে পাওয়া যায় না তা রাজউক স্বীকার করেছে। এ ছাড়া নকশা অনুমোদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে জনগণকে রাজউকে গেলে যে হয়রানি হতে হয় সে কথাও স্বীকার করেছে তারা। কমিটি এসব বিষয়ে রাজউকের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন করার সুপারিশ করে। কমিটি মনে করে, প্রতিষ্ঠানটির নতুন চেয়ারম্যানও এ বিষয়ে আগ্রহী।জানা যায়, ২০১৪ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন রাজউকের কাছে শতাধিক বহুতল ভবনের নথি চাইলেও গায়েব হওয়ার দোহাই দিয়ে তা সরবরাহ করা হয়নি। একইভাবে ২০১১ সালে নবম সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তৎকালীন গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী সংসদকে রাজউকের নথি গায়েবের কথা জানিয়েছিলেন। রাজউকের নথি হারানো রোধে সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে বলে তখন উল্লেখ করা হয়। এরই মধ্যে গুলশান-বনানী-বারিধারার তিন হাজার ৮৪৮টি নথির ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩ পৃষ্ঠার সংরক্ষণ কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া উত্তরা, পূর্বাচলসহ অন্যান্য আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প এলাকার এবং নকশা অনুমোদন ও অন্যান্য শাখার ১৮ হাজার নথির ১৮ লাখ পৃষ্ঠা ডিজিটাল করে সংরক্ষণ করার কাজ ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে জানানো হয়। বৈঠকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পূর্ত অডিট অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর