ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভারতের জম্মু-কাশ্মীর। শ্রীনগরের ঈদগা এলাকায় ১৬ বছরের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল দফায় দফায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বিক্ষোভকারীদের।
পুলিশ সূত্রে খবর গত ২৫ অক্টোবর থেকে নিখোঁজ ছিল শ্রীনগরের ঈদগা এলাকার বাসিন্দা কায়সার সফি। ছয় দিন পর শহরের শালিমার এলাকায় রাস্তার ধার থেকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে শ্রীনগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার সকালেই হাসপাতালে মৃত্যু হয় কায়সারের। কায়সারের নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই অশান্ত হয়ে ওঠে উপত্যকা। কায়সারকে দাফন করার পরই শহরের একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে বিক্ষোভকারীরা, ভারতবিরোধী স্লোগানও তোলা হয়। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পেলেট গান ব্যবহার করে নিরাপত্তা বাহিনীও। তাদের ছোড়া পেলেট বিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন বিক্ষোভকারী।
যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরাই জোর করে ওই যুবককে মাদক জাতীয় কিছু খাইয়েছে।গত ৮ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হিজবুল মুজাহিদীন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির নিহত হওয়ার পর থেকে ১২০ দিন ধরে অচলাবস্থা জারি রয়েছে গোটা কাশ্মীর জুড়ে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ডাকা হরতালের সময়সীমা আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শ্রীনগর শহরের কিছু জায়গায় অফিস-আদালত-বাজার-দোকান খোলা থাকলেও কাশ্মীরের অধিকাংশ জায়গায় দোকানপাট, বাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থাও। ফলে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করেও বিক্ষোভকারীদের জমায়েত ঠেকানো যাচ্ছে না। উপত্যকার একাধিক জায়গায় স্কুলে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত ৩১টি স্কুলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নিরাপত্তার কারণেই স্কুলের পরীক্ষাও স্থগিত রাখা হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য সরকার, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন সংগঠনের তরফে শান্তির আর্জি জানানো হলেও সহিংসতা থামছে না।