বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
স্বাস্থ্য প্রতিদিন

ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট হলে...

ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট হলে...

ঘুম হচ্ছে আল্লাহতায়ালার সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামতের একটি। রাতের ফ্রেশ ঘুম একটি কর্মময় সুন্দর দিনের নিশ্চয়তা দেয়। কিন্তু অনেকের ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। একে চিকিৎসাবিদ্যায় এপনিয়া বলে। টানা ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস বন্ধ থাকলে বা একেবারে কমে গেলে এ অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।

কার কার এ রোগ হয় : এটা সাধারণত বড়দের রোগ এবং শিশুরা খুব কম ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয়। তাছাড়া হার্টের রোগসহ বেশ কিছু রোগ আছে সেগুলোতে আক্রান্ত হলে স্লিপ এপনিয়া হতে পারে। এই রোগীরা সাধারণ একটু ঘুমালেই নাক ডাকতে থাকে। এরা সারা দিন ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে চলে। তাদের স্মৃতিশক্তি একবারেই কম হয়ে থাকে। এমন লোক ড্রাইভিং পেশায় নেশার সঙ্গে জড়িয়ে থাকলে এক্সিডেন্টের ঝুঁকি মারাত্মক বেড়ে যায়।

কি কারণে হয় : আমরা যখন নাক ও মুখ দিয়ে যে বাতাস গ্রহণ করি তা শ্বাসনালি নামক লম্বা পথ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ফুসফুসে গিয়ে পৌঁছে। স্লিপ এপনিয়ার শুরুতে ঘুমের মধ্যে শ্বাসনালি পথ বন্ধ বা কলাপস হয়ে যায়। এই অবস্থায় রোগী একটু জোরে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় না। যখন ঘুমাই তখন ব্রেইন শ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে জড়িত মাংসপেশিগুলোকে নির্দেশ দেয় সুন্দরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সে সময় ব্রেইন এ ধরনের নির্দেশ পাঠাতে পারে না। তখন স্বাভাবিকভাবেই শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ব্রেইন তখন বাধ্য হয়ে রোগীকে জাগিয়ে তোলে।

স্লিপ এপনিয়া কেন এত ভয়াবহ : স্লিপ এপনিয়া বেশির ভাগ সময় মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত বহন করে। যেমন : (ক) ব্রেইনের রোগ, (খ) জন্মগত কোনো ত্রুটি (গ) কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (ঘ) হার্টের রাগ যেমন; হার্ট ফেইলর, অনিয়ন্ত্রিত হূদস্পন্দন ইত্যাদি। (ঙ) উচ্চরক্তচাপ।

চিকিৎসা : সঠিক চিকিৎসার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেগুলো হলো : শোয়ার স্টাইল পরিবর্তন। কারণ চিৎ হয়ে শুলে স্লিপ এপনিয়া বা শ্বাসকষ্ট বাড়ে।

সুষম খাবার গ্রহণ। নিয়মিত ব্যায়াম। ওজন কমানো, ১০ ভাগ ওজন কমালে স্লিপ এপনিয়া ২৫ ভাগ কমে যায়। কিছু ওষুধের সাহায্যের চিকিৎসা। অপারেশন বা সার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা। এছাড়া স্লিপ এপনিয়া কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গের রোগ নয়। ফলে একজন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ বা একজন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের সহায়তা ছাড়া এ ধরনের  রোগীর চিকিৎসা দেওয়া প্রায় কষ্টকর। মনে রাখবেন, প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

বক্ষ্যব্যাধি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর