বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
মেয়ের উত্ত্যক্তকারীদের হাতে পা হারালেন বাবা

আসামিদের কারাবন্দী দেখতে চায় হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক বর্গাচাষি শাহানূর বিশ্বাসের পা হারানোর ঘটনায় জড়িতদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কারাবন্দী (গ্রেফতার) করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গতকাল বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেয়। এ আদেশ বাস্তবায়ন করে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আদেশে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, কালীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিবাদী করা হয়েছে। কালীগঞ্জের নলডাঙ্গা গ্রামের শাহানূর এখন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বখাটেদের আঘাতে আহত এই বর্গাচাষির দুটি পা হাঁটুর ওপর থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল সংবাদ প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। এরপর আদালত সুয়োমটো (স্বতপ্রণোদিত) আদেশ দেয়।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস। শুনানিতে পত্রিকাটি দেখিয়ে বিচারক বলেন, সংবাদটি দেখেছেন? আমরা সুয়োমটো আদেশ দেব। এ সময় ডিএজি বলেন, ওই ঘটনায় থানায় এফআইআর হয়েছে। বিচারক বলেন, ক্রিমিনাল মামলা তো হবেই। অ্যারেস্ট করবেন না, ঘুরে  বেড়াবে যুবলীগ নেতা, নো। পরে আদালত আদেশ দেয়।

‘মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করাই অপরাধ? দুই পা গেছে, এখন ভিটেছাড়া হওয়ার ভয়’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই সংবাদে বলা হয়, মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুই পা হারিয়েছেন শাহানূর বিশ্বাস। এখন ভিটে ছাড়তে হয় কিনা, সেই ভয়ও পেয়ে বসেছে তাকে। ওই ঘটনায় প্রথমে মামলা নিতে চায়নি পুলিশ। পরে মামলা হলেও এখন আর আসামি ধরছে না পুলিশ। উল্টো শাহানূরের স্বজনদের হুমকি দিচ্ছে আসামিরা। ঘটনাটি ১৬ অক্টোবরের কালীগঞ্জ থানার নলভাঙ্গা গ্রামের। বখাটেরা শাহানূরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। শাহানূরের আত্মীয় মো. ইয়াকুব আলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলায় অভিযোগ করেন, আসামিরা প্রথমে লোহার শাবল দিয়ে পিটিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় শাহানূরকে। পরে হাতুড়ি ও ছেনি দিয়ে হাঁটুতে আঘাত করে। অন্যরা লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়  পেটায়। এতে শাহানূরের মারাত্মক রক্তক্ষরণ হয়। ইয়াকুব সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন। ১৬ জনকে আসামি করে দ্বিতীয় মামলাটি করেন ভাই মহিনূর। দুই আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকিরা পলাতক। সংবাদে বলা হয়, প্রধান আসামি কামাল নলভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর