সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জাইকার সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক কাটানোর উদ্যোগ

আজ জাপান যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে মেট্রোরেলে কর্মরত সাত জাপানি নাগরিক নিহতের ঘটনার পাঁচ মাস পরেও জাইকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে পারেনি সরকার। এখনো নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন ঢাকায় অবস্থানরত জাপানি নাগরিকরা। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়ন ও সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন মেট্রোরেল প্রকল্পের ওই সাত পদ এখনো খালি রয়েছে। যদিও মেট্রোরেলের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয়েছে। কিন্তু হলি আর্টিজানের ঘটনায় জাইকার সঙ্গে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। ফলে দেশটির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন ও চলমান প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ ৫ ডিসেম্বর জাপান যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তার এই সফরের মাধ্যমে জাইকার সঙ্গে চলমান বৈরি সম্পর্কের অবসান ঘটবে এবং নতুন প্রকল্পে অর্থ সহায়তাসহ সার্বিকভাবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হতে পারে বলে আশা করছে সরকার। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, জাইকার অর্থায়নে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের দরপত্র কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। যদিও সরকার বলছে স্থগিত নয়, সময় বাড়ানো হয়েছে।

 এর বাইরে জাইকার আরও দুটি প্রকল্পে জাপানি নাগরিকেরা কাজে যাচ্ছেন না বলে জানা গেছে। মেট্রোরেলের কাজেও অনেকটা বিরতি দিয়ে সম্প্রতি পুনরায় শুরু হয়েছে। তবে জাইকা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে সরছে না জাইকা এবং জাপান। কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়টি তারা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। গত ১ জুলাই গুলশান হত্যাকাণ্ডে সাত জাপানি নাগরিক নিহত হন। তারা সবাই মেট্রোরেল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ফলে এ প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে তাদের স্থলে নতুন বিশেষজ্ঞ বা পরামর্শক পাঠানোর কথা গত ১০ জুলাই চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল জাপান সরকার। যদিও এখনো এসব পদে নতুন লোক পাঠায়নি জাপান।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, মেট্রোরেল ছাড়াও কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তার মধ্যে জাইকা দেবে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণেও অর্থ দিচ্ছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে আলোচনা করতেই অর্থমন্ত্রী জাপান সফর করছেন বলে জানা গেছে। অর্থমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একজন করে অতিরিক্ত সচিব, পুলিশ কমিশনার এবং বিদ্যুৎ বিভাগের একজন যুগ্মসচিব জাপান সফর করবেন।

অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—ঢাকায় অবস্থানরত এবং ঢাকা সফরে আসা জাপানিসহ অন্য বিদেশি নাগরিকদের ‘ক্লোজড প্রটেকশনের’ আওতায় আনা হচ্ছে। এতে বিমানবন্দরে নামার পর থেকে দেশে কাজ শেষ করে বিমানবন্দরে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত পুলিশ তাদের সঙ্গে থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

সর্বশেষ খবর