সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
সংসদে বিমানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর বিমানে ত্রুটি মানবসৃষ্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী হাঙ্গেরিগামী বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজে মানবসৃষ্ট কারণেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল বলে গতকাল জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন  বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। তবে মানবসৃষ্ট ওই কারণটি অবহেলা নাকি নাশকতা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানান, তদন্তে জানা গেছে—বিমানের অয়েল সেন্সরের পাশে অবস্থিত অয়েল বি-নাট ঢিলের কারণে অয়েল লিকেজের ফলে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজটি তুর্কমেনিস্তানে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়। ওই ঘটনার জন্য গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির পেশ করা তদন্ত রিপোর্টে পাওয়া গেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এয়ারক্রাফটের ক্ষেত্রে এ ধরনের ত্রুটি কিংবা নিরাপত্তার ঝুঁকি সৃষ্টি হলে তিনটি ফ্যাক্টরকে ভিত্তি করে তদন্ত পরিচালিত হয়। প্রথমত : মেকানিক্যাল /টেকনিক্যাল ফ্যাক্টর, দ্বিতীয়ত : এনভায়রনমেন্টাল ফ্যাক্টর এবং তৃতীয়ত : হিউম্যান ফ্যাক্টর (ইনএফিসিয়েন্সি-ল্যাক অব প্রফেশনালিজম অথবা ইনটেনশনাল অথবা ক্যালাসনেস। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতীয়মান হয়েছে যে, এ ক্ষেত্রে তৃতীয় অর্থাৎ হিউম্যান ফ্যাক্টরটি বিমানের বর্ণিত ফ্লাইটের ত্রুটির জন্য দায়ী। তবে এটা দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের অবহেলা, না কি নাশকতা, তা নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট এজেন্সি খতিয়ে দেখছে।

রাশেদ খান মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিভিআইপি ফ্লাইটটি গত ২৭ নভেম্বর স্থানীয় সময় ৮টা ৫৭ মিনিটে হাঙ্গেরির বুদাপেস্টের উদ্দেশে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। যাত্রা শুরুর ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর বিমানের পাইলটের দৃষ্টিগোচর হয় যে, বাম ইঞ্জিনে অয়েল প্রেসার কম দেখাচ্ছে। এ ঘটনায় কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে নিকটবর্তী তুর্কমেনিস্তানের আসগাবাদ বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয় বিমানটি। এ ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অধীনেও পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ইতিমধ্যে ৩০ নভেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও ৪ ডিসেম্বর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তদন্ত রিপোর্ট দুটি পাওয়া গেছে। উভয় প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিমানের অয়েল সেন্সরের পাশে অবস্থিত অয়েল বি-নাট ঢিলের কারণে অয়েল লিকেজ ঘটে। ফলে অয়েল প্রেসার কমতে থাকে। তিনি বলেন, বিমানের এই এয়ারক্রাফটি ইন্সপেকশনের সময় যে ত্রুটি ধরা পড়েছিল, তা মেরামতের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে বিমানের ছয়জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর