মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিদ্রোহীর ছড়াছড়ি কাউন্সিলর পদে

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন

রোমান চৌধুরী সুমন ও এম এ শাহীন, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ১ নম্বর ওয়ার্ড। ওই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ছয়জন আর বিএনপির দুজন। কোনো দলই একক প্রার্থী দিতে পারেনি। ফলে সব প্রার্থীই ভোটযুদ্ধে। একই অবস্থা ২ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছয়জন আর বিএনপির দুজন। শুধু এ দুই ওয়ার্ডই নয়, ২৭টি ওয়ার্ডের চিত্র একই। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভিতর অস্বস্তি বিরাজ করছে। জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। ফলে কে দলের প্রার্থী, এ নিয়ে ধোঁয়াশায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে কাউন্সিলর পদে দলের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি দুই দলেই। প্রতিটি ওয়ার্ডেই দুই দলের একাধিক প্রার্থী। এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১৫৬ জন। সংরক্ষিত ৯টি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন ৩৮ জন। দুই দলই কাউন্সিলর একক প্রার্থী নির্ধারণে কমিটি গঠন করেও কোনো কিনারা করতে পারেনি। নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, বিএনপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী তেমন নেই। দু-চারটি ওয়ার্ডে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে যারা আন্দোলনে ভূমিকা পালন করেছেন, জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছেন, তাদেরই বিএনপি নেতা-কর্মীরা ভোট দেবেন। এ ব্যাপারে অলিখিত নির্দেশনা দেওয়া হবে। আর যারা সরকারের সঙ্গে আঁতাত করেছেন, তাদের প্রত্যাখ্যান করা হবে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন জানান, ‘প্রতীক পেলেও আমরা একক প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করি, এ ব্যাপারে খুব শিগগিরই একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারব।’

বভিন্ন ওয়ার্ডে জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, কাউন্সিলর পদে ১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহিম, যুবলীগ নেতা হাজী ওমর ফারুক, নব্য আওয়ামী লীগ হাজী আনোয়ার ইসলাম, হাজী ইউনুছ মিয়া, জাহিদুল ইসলাম ও কামাল হোসেন খন্দকার; বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম ও রওশন আলী। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা তোফায়েল হোসেন, আরিফুল হক হাসান, নজরুল ইসলাম, থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল বাদল, শ্রমিক লীগ নেতা সুমন মাহমুদ। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. সাদরিল; আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম বাবুল, আনিছুর রহমান। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে থানা যুবলীগ আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি, যুবলীগ নেতা মামুনুর রশিদ, আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম। ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন আলা, রফিকুল ইসলাম বাবু ও মিজানুর রহমান খান; বিএনপি নেতা তানভীর কবির, হুমায়ন কবির, আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা মহসীন ভূঁইয়া, রুহুল আমিন; মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বিএনপি নেতা উজ্জ্বল হোসেন, গাজী সেলিম, সাগর প্রধান। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা ইসরাফিল প্রধান, মহিউদ্দিন শিকদার; আওয়ামী লীগ নেতা সামছুল আলম বাচ্চু, সিরাজুল ইসলাম, সুজন আলী, সেলিম প্রধান, যুবলীগ নেতা বিল্লাল হোসেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা ইফতেখার আলম খোকন, সিরাজ খান, কামরুল হুদা বাবু; বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা জমশের আলী ঝন্টু, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি অহিদুল ইসলাম ছক্কু। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়েদ উল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাজমুল আলম সজল। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা আবদুল করিম বাবু, আবদুল কাদিরের ছেলে মিনহাজুল কাদির মিমন। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহেল করিম রিপন; বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, গোলাম নবী মুরাদ। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা হান্নান সরকার, নুর মো. পনেছ; আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম, আলী আজহার তৌফিক ও ফকির উল্লাহ। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে জাপা নেতা শাহ আলম, কাজী শহীদ আহাম্মদ, আজাহারুল ইসলাম ভূঁইয়া; বিএনপির সুলতান আহম্মেদ ভূঁইয়া। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা মো. হান্নান, সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল, রাহাত মিয়া; বিএনপির আবুল কাউসার আশা, আবদুল হালিম। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি আনোয়ারুল আলম রিপন, হাজী মো. আলী ও আশিক আহম্মেদ। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা সামছুজ্জোহা ও শ্রমিক লীগ নেতা মোজাম্মেল হক এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম, আলমগীর মিয়া ও ইমরান চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর