মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

সরকারকে ধাক্কা না দিলে কাজ হবে না

—আবুল মকসুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, সরকার এমন এক জিনিস যাকে ধাক্কা বা চাপ না দিলে সরবে না। এমনকি নড়বেও না। কাজও করবে না।  অনেকটা পাথরের মতোই বলা যায়। সংখ্যালঘুদের সমস্যা সমাধানে যা করণীয় তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে চাপ দিতে হবে। চাপ না দিলে সরকার নিজ থেকে কোনো কিছুই করবে না।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। নাগরিক উদ্যোগ নামে একটি সংগঠন এর আয়োজন করে। এতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ‘সাউথ এশিয়া স্টেট অব মাইনরিটিজ রিপোর্ট-২০১৬’ নামে বই প্রকাশ করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন দেশের সংখ্যালঘুদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে তা নিরসনের সুপারিশও করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করেন নাগরিক উদ্যোগের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক আফসানা বিনতে আমিন।

রিপোর্টের সুপারিশ সম্পর্কে সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এ কাজ করার কথা সরকারের। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও বইটিতে অনেক ভালো সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। তা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। আর সংখ্যালঘুদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য গবেষণা করা দরকার এবং তাদের অন্যদের মতো পূর্ণ মর্যাদায় বাস করতে দেওয়ার বিষয়ে সবাইকে বদ্ধপরিকর হতে হবে।

তিনি বলেন, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের জন্য রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। তাদেরকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ক্ষমতায়ন করতে হবে এবং সাংস্কৃতিক অধিকার দিতে হবে।

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধ কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য করা হয়নি। করা হয়েছিল নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষদের মুক্ত করার জন্য। ’৭১ সালের পর থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। কিন্তু কোনো ঘটনারই বিচার আমরা পেতে শুরু করিনি। এক্ষেত্রে সরকারের কোনো প্রতিকার নেই এবং প্রতিক্রিয়াও নেই। নির্যাতন বন্ধে বিশেষ আইন থাকার পরও কাজ হয় না।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, সংখ্যালঘুদের ৪৫ বছর ধরে অনগ্রসর জাতিতে পরিণত করা হয়েছে। ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে এ জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতাহীন করা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়ে সংবিধানে বিশেষ ধারা থাকলেও তা ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করা হয়েছে। আর সংখ্যালঘু নিঃস্বকরণ প্রক্রিয়া রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিকভাবে নেওয়া হয়েছে। 

নাগরিক উদ্যোগের গবেষক মুক্তশ্রী চাকমা বলেন, সংখ্যালঘুদের মধ্যেও যারা সংখ্যালঘু তারা আরও বেশি বঞ্চিত হয়। গবেষণাতেও সব জনগোষ্ঠীর তথ্য তুলে আনা সম্ভব হয় না। কারণ দাতাদের কিছু ধরাবাধা নিয়ম থাকে। বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মতামত তুলে ধরার বিষয় থাকে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর