মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
আলোচনা সভায় বক্তারা

সোহরাওয়ার্দী রাজনীতিতে মানবতা মেধা মননের সংযোগ ঘটিয়েছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় পার্টি-জেপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের জন্য তিনি (সোহরাওয়ার্দী) আজীবন সংগ্রাম করেছেন। রাজনীতিতে মানবতাবোধ, মেধা, মনন ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সংযোগ ঘটিয়েছেন তিনি। কোনো লোভ-লালসার কাছে আত্মসমর্পণ করে তিনি কখনও আদর্শচ্যুত হননি। তার জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন প্রজন্মকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার আহ্বান জানান বক্তারা। গতকাল রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-আইডিইবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, সোহরাওয়ার্দীকে বলা হতো গণতন্ত্রের মানসপুত্র। কারণ তার সব কার্যক্রম ছিল গণতান্ত্রিক পন্থায়। গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যেই শর্তসাপেক্ষে তিনি সে সময় বগুড়ার মোহম্মদ আলীর কেবিনেটে যোগ দিয়েছিলেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ভাবাদর্শেই বঙ্গবন্ধু রাজনীতি করেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। আর এখন বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশকে সামনে এগিয়ে নিচ্ছেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে লেখা এক চিঠিতে সোহরাওয়ার্দী বলেছিলেন ‘আমি যদি মানুষের কোনো কাজেই না আসতে পারি, তাহলে আমার বেঁচে থেকে কী লাভ।’ বঙ্গবন্ধু ও মানিক মিয়া ছিলেন সোহরাওয়ার্দীর দুই যোগ্য শিষ্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন একজন মানবতাবাদী মানুষ। গণতন্ত্রের জন্য তার অবদান ছিল অসাধারণ। তিনি এমন একজন মানুষ যিনি শুধু শিক্ষাই অর্জন করেননি, তিনি মানবতাবোধের শিক্ষা অর্জন করেছিলেন।

বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ও গবেষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, অবিভক্ত ভারত ও বাংলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন মুসলমানদের চেয়ে সবদিক দিয়ে এগিয়ে ছিলেন। সে কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক নেতৃত্বও বিকশিত হয়েছিল। বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে যে ক’জন নেতার সৃষ্টি হয়েছিল- সোহরাওয়ার্দী ছিলেন তাদের মধ্যে উজ্জ্বল নক্ষত্র।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বলেন, রাজনীতিতে সোহরাওয়ার্দীর হাতেখড়ি হয়েছিল শ্রমিকদের হাতে। তাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য তিনি লড়াই করেছেন। তিনি ছিলেন পেশাদার রাজনীতিক।

জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, সোহরাওয়ার্দীর রাজনীতিতে লালসা ছিল না। তার রাজনীতি ছিল মানুষের অধিকার, স্বাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য। উঁচুতলার মানুষ হয়েও তিনি নিচুতলার মানুষের সঙ্গে মিশতেন।

সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ও গবেষক সিরাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, সোহরাওয়ার্দী ছিলেন রাজনৈতিক দার্শনিক। গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উচিত সোহরাওয়ার্দীর ওপর ব্যাপক গবেষণার ব্যবস্থা করা, যেন ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি কাটে। জেপির নির্বাহী সম্পাদক সাদেক সিদ্দিকী পরিচালনায় আলোচনায় আরো অংশ নেন জেপির প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহিম, এএইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ, শেখ জয়নাল আবেদীন, এজাজ আহমেদ মুক্তা, নাজমুন্নাহার বেবী, ভাইস-চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর