রবিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
দুদকের গণশুনানি

সাব-রেজিস্ট্রার ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তুলাধোনা

মোস্তফা কাজল (নারায়ণগঞ্জ) সোনারগাঁও থেকে ফিরে

গণশুনানিতে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে তুলাধোনা করলেন স্থানীয় জনগণ। তাদের অভিযোগ, টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। সাব-রেজিস্ট্রার সময়মতো অফিসে আসেন না। বিকালে এসে জমি রেজিস্টারের নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন বাড়তি টাকা। পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকতার বিরুদ্ধে অভিযোগে স্থানীয় জনগণ বলেন, কাঙ্ক্ষিত টাকা না দেওয়ায় জীবিত ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। টাকা না দিলে সরকারি ওষুধ ও সেবা মিলছে না। জরুরি ও গাইনি বিভাগে ডাক্তার থাকেন না। এমনি অনেক অভিযোগ ওঠে এসেছে গণশুনানিতে। গণশুনানির অনুষ্ঠানে দুদকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের কোনো সরকারি অফিসে দুর্নীতি চলবে না। তিনি গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদ চত্বরে দুর্নীতি প্রতিরোধবিষয়ক গণশুনানির উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন। ড. নাসিরউদ্দিন আরও বলেন, গণশুনানি একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা। আর এ গণশুনানির মূল উদ্দেশ্য, সমাজে দুর্নীতির মাত্রা কমিয়ে আনা। শুনানি শেষে অভিযোগকারীদের আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উত্থাপিত সমস্যার সমাধান আগামী ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করার জন্য দুদক কমিশনার নির্দেশ দেন। ড. নাসির বলেন, সাধারণ জনগণকে সেবা দিতে না পারলে বাড়ি চলে যান।

 উপজেলার যে পাঁচটি সরকারি অফিস নিয়ে গতকালের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে এগুলো হলো— সোনারগাঁও উপজেলা ভূমি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, উপজেলা বিদ্যুৎ সমিতি অফিস ১ ও ২, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ অফিস, উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। গণশুনানিতে দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পাঁচটি অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি অফিসগুলোতে সেবাবঞ্চিত ভুক্তভোগী নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন। কমিশনার ড. নাসিরউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে হলে সরকারি কর্মকতাদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যদি কোনো অসৎ কর্মকর্তা দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলতে চান তারা চাকরি ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যেতে হবে। চাকরি করতে হলে সাধারণ জনগণকে তাদের প্রয়োজনীয় সেবা দিতে হবে। সরকারি অফিসগুলোতে দালাল চক্রের আনাগোনা বেশি লক্ষ্য করা যায়। ভূমি অফিসের দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে বারোপাড়ার তারেক মাহমুদ জর্জ বলেন, ‘আমার ওয়ারিশান জমি অন্যর নামে নামজারি হয়েছে। আমি প্রতিকার চাইলে ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। সাব-রেজিস্টার অফিস সম্পর্কে বলা হয়, দলিল করতে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি টাকা নেওয়া হয়। দলিলের নকল তুলতেও বাড়তি টাকা দিতে হয়। জমি বিক্রি করতে গেলেও ক্রেতা এবং বিক্রেতাকে টাকা দিতে হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর