বুধবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

গেরিলা ২,৩৬৭ জনের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের ২ হাজার ৩৬৭ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার তালিকা-সংবলিত গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন ও সুব্রত চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এর আগে গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর ২ হাজার ৩৬৭ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার তালিকা-সংবলিত ওই গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। ওই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি এবং প্রাপ্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও ভাতা দিতেও সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে গেলে আদালত গতকাল তা খারিজ করে দেয়। এর ফলে গেরিলা বাহিনীর ২ হাজার ৩৬৭ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রয়েছে বলে রিটকারীদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

২০১৩ সালের ২২ জুলাই গেরিলা বাহিনীর ওই ২ হাজার ৩৬৭ জন যোদ্ধাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। পরে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, যাতে ওই গেরিলা যোদ্ধাদের মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর সরকারের তালিকা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ওই গেরিলা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার ও ইউনাইটেড ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ঐক্য ন্যাপ) সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য। রিটে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার পরপরই ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা এবং সদস্যরা একটি বিশেষ গেরিলা বাহিনী গঠন করে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি গেরিলা বাহিনীর কমান্ডাররা ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকার এবং স্বাধীনতা-উত্তর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকারসহ প্রতিটি সরকার এই বিশেষ গেরিলা বাহিনীকে মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণকারী অন্যতম মুক্তিবাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি রিটের শুনানি শেষে রুল জারি করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। রুলের শুনানি শেষে গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর রায় দেয় হাইকোর্ট।

সর্বশেষ খবর