বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
নাসিক নির্বাচন

বিজয়ীদের ২৯ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে নির্বাচিত ২৭ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ৯ নারী কাউন্সিলরের মধ্যে ২৯ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে। আর চারজন এইচএসসি উত্তীর্ণ ও তিনজন স্নাতক পাস। তাছাড়া ২৬ কাউন্সিলর হলেন ব্যবসায়ী। মামলাও রয়েছে বিজয়ী কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সুজনের সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বক্তব্য দেন সুজনের কেন্দ্রীয় সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি আবদুর রহমান, সেক্রেটারি ধীমান সাহা জুয়েল।  সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘নির্বাচন কমিশনার চাইলেই যেমন নির্বাচন বাতিল করতে পারে, তেমনি নির্বাচন কমিশন চাইলেও যদি ক্ষমতাসীন দল না চায় তবে সুষ্ঠু নির্বাচন করা দুরূহ। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন ছিল অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু।’ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৭ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ২৫ জনই ব্যবসায়ী। বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মেয়র পদে নির্বাচিত সেলিনা হায়াৎ আইভী একজন চিকিৎসক। সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হয়েছেন। সংরক্ষিত (নারী) আসনের কাউন্সিলর পদে ৭ জনই গৃহিণী।

২৭ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে, ১৪ জনের বিরুদ্ধে অতীতে এবং ৮ জনের উভয় সময়ে মামলা ছিল বা আছে। ৩০২ ধারায় ৩ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে এবং ৪ জনের বিরুদ্ধে অতীতে এবং ১ জনের বিরুদ্ধে উভয় সময়ে মামলা ছিল বা আছে। ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম মো. সাদরিল ও ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শওকত হাসেমের বিরুদ্ধে বর্তমানে, ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ইকবাল হোসেন, ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আলী হোসেন আলা ও ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অতীতে এবং ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে উভয় সময়ে (অতীত ও বর্তামন) ৩০২ ধারায় মামলা ছিল ও আছে। নবনির্বাচিত ৯ জন সংরক্ষিত (নারী) আসনের কাউন্সিলরের মধ্যে শুধুমাত্র ১ জনের বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল।  

নবনির্বাচিত সর্বমোট ৩৭ জন জনপ্রতিনিধির মধ্যে ১২ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে, ১৫ জনের বিরুদ্ধে অতীতে এবং ৮ জনের বিরুদ্ধে উভয় সময়ে মামলা আছে বা ছিল। ৩০২ ধারায় ৩ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে এবং ৪ জনের বিরুদ্ধে অতীতে এবং ১ জনের বিরুদ্ধে উভয় সময়ে মামলা ছিল। বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতার তুলনায় মামলা সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের নির্বাচিত হওয়ার হার বেশি। অর্থাৎ মামলা সংশ্লিষ্টদেরই ভোটাররা অধিক হারে বেছে নিয়েছেন।  

মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ২৭ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ১৭ জন বছরে ৫ লাখ টাকার কম আয় করেন। বছরে ৫ লাখ থেকে ২৪ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করেন অবশিষ্ট ১০ জন। ৯ জন সংরক্ষিত (নারী) আসনের কাউন্সিলরের মধ্যে ৫ জন বছরে ৫ লাখ টাকার কম আয় করেন। ৩৭ জন প্রতিনিধির মধ্যে ২২ জনের বার্ষিক আয় ৫ লাখ টাকার কম এবং ১২ জনের ৫ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। 

নবনির্বাচিত ২৭ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ১৯ জন করদাতা। করদাতা ১৯ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৩ জন গত অর্থবছরে লক্ষাধিক টাকা কর দিয়েছেন। লক্ষাধিক টাকা কর প্রদানকারীরা হচ্ছেন ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মতিউর রহমান (৩ লাখ ৮৭ হাজার ১৭০ টাকা), ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহুল আমিন (১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮২ টাকা) এবং ২০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ (১ লাখ ২ হাজার ৪০০ টাকা)। 

নবনির্বাচিত ৯ জন সংরক্ষিত (নারী) আসনের কাউন্সিলরের মধ্যে ৮ জন করদাতা।  নবনির্বাচিত সর্বমোট ৩৭ জন জনপ্রতিনিধির মধ্যে ২৮ জনই করদাতা। এর মধ্যে ৫ হাজার টাকা বা তার চেয়ে কম কর দেন ১২ জন এবং তিনজন লক্ষাধিক টাকা কর দেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৭ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে ১৭ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে। ৪ জনের জনের এইচএসসি। ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ স্নাতক ডিগ্রিধারী।  

৯ জন সংরক্ষিত (নারী) আসনের কাউন্সিলরের মধ্যে ৫ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে এবং ৩ জনের এসএসসি। ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আফসানা আফরোজ স্নাতক ডিগ্রিধারী। 

সর্বশেষ খবর