রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

বন্যার পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত, পুড়ে গেছে তার হাত-মুখ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুরাইয়া আক্তার বন্যা (১৫)। আর মাত্র কয়েক দিন পরই এসএসসি পরীক্ষা। অনেক স্বপ্ন ছিল এবার এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে। প্রস্তুতিও ছিল তেমন। কিন্তু যে হাত দিয়ে লিখবে— পরীক্ষা দিবে সেই হাত ও মুখ গ্যাসের আগুনে ঝলসে গেছে। বন্যার পরীক্ষা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে গেছে। গতকাল কথাগুলো বলছিলেন দগ্ধ বন্যার মামাতো বোন রুমা আক্তার। বন্যা এখন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের তৃতীয় তলায় তিন নম্বর ওয়ার্ডে। এর আগে শুক্রবার টঙ্গীর দক্ষিণ আরিচপুরে মো. আলীর বাড়ির চতুর্থ তলায় চুলার আগুন থেকে এ ঘটনা ঘটে। মামাতো বোন রুমা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার আগে বন্যা তার মায়ের কাছে পিঠা খেতে চায়। পিঠা বানানোর ব্যবস্থা না থাকায় বন্যা তার মাকে বলে, আমি সবাইকে নুডুলস বানিয়ে খাওয়াব। এরপর বন্যা রান্না ঘরে গিয়ে দিয়াশলাই জ্বালানোর পরপরই বিকট শব্দে দাউ দাউ করে আগুন বন্যার শরীর ঝলছে দেয়।

 পাশের বাড়ির মালিক মঞ্জু ফরাজি বলেন, আগুনের খবর পেয়ে তারা ওই বাড়িতে গিয়ে প্রথমে বন্যাকে উদ্ধার করে। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর দেখা যায়, চুলার চাবি দেওয়া ছিল। এমনকি বাসায় থাকা এলপি গ্যাস সিলিন্ডারও লিক ছিল। রান্না ঘরের জানালা ও দরজা বন্ধ ছিল। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে গ্যাস লিকের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। 

টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতনের সহকারী প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বলেন, বন্যা আগামী ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে খুব মেধাবী ছাত্রী। তার দগ্ধ অবস্থার কথা শুনে সব শিক্ষকই দুঃখ প্রকাশ করছেন। তিনি বলেন, আমরা আশা ছাড়িনি। বন্যা কিছুটা সুস্থ হয়ে যেন পরীক্ষা দিতে পারে তার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

ঢামেকের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, আগুনে বন্যার শরীরের ১২ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার হাত ও মুখমণ্ডল পুড়ে গেছে। তাকে শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। তবে তার সুস্থ হতে আরও অনেক সময় লাগবে।

সর্বশেষ খবর