শিরোনাম
রবিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্বামীর প্রতি ক্ষোভ থেকেই শিশু হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বামীর প্রতি ক্ষোভ থেকেই শিশু হত্যা

স্বামী আমজাদ হোসেন একটি কোম্পানির মার্কেটিং অফিসার। কাজের সুবাদে তাকে যেতে হয় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। যে কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। আর জমানো ক্ষোভের বসে নিজের সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন স্ত্রী শাহানা বেগম। কিন্তু দুই সন্তানের মধ্যে চার বছর বয়সী আগমনী এখনো দাদা-দাদির হেফাজতে বেঁচে আছে। আর দেড় বছর বয়সী আরিয়ানকে হত্যার অভিযোগে শাহানা এখন জেলহাজতে রয়েছেন। গত বছরের ২৩ অক্টোবর রাতে উত্তর বাড্ডার চ-৪৯/২ নম্বর পঞ্চকুঞ্জ বাড়ির চতুর্থ তলায় অচেতন অবস্থায় শাহানাসহ তার দুই সন্তানকে উদ্ধার করা হয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গেই তাদের ভর্তি করা হয়েছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।

প্রাথমিকভাবে তখন ঘটনাটিকে রহস্যজনক মনে হয়েছিল। পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে প্রকৃত ঘটনা। এতে জানা গেছে, স্বামীর প্রতি ক্ষোভ আর সন্দেহের বশবর্তী হয়ে সন্তানদের নিয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন শাহানা।

এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল জলিল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তার স্বামী আমজাদ মার্কেটিংয়ের চাকরি করত। বিভিন্ন সময় তিনি ঢাকার বাইরে যেতেন। দুই তিন দিনও বাসায় ফিরতেন না। এ নিয়ে শাহানার সঙ্গে কোন্দল চলছিল। তাকে সন্দেহও করত। সেই ক্ষোভের জেরে তিনি নিজের সন্তানদের বিষপান করিয়ে মেরে ফেলে নিজেও আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। ওসি বলেন, এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ৩২৮ ধারায় একটি মামলা চলমান রয়েছে।  তার বিরুদ্ধে শিশু হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। বর্তমানে শাহানা জেলহাজতে আছেন। বাড্ডার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধারের পরই হাসপাতালে প্রায় দশদিন ভর্তি থাকেন তিনি। এরপরই আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়। 

ওই বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান শিকদার তখন জানিয়েছিলেন, তিন বছর ধরে আমজাদ পরিবার নিয়ে চতুর্থ তলার ওই ফ্ল্যাটে থাকছিলেন। ঘটনার আগ পর্যন্ত তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখেননি। কিন্তু ঘটনার দিন সকালে ওই দম্পতির মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। পরে আমজাদ অফিসে চলে যান। রাত ১টার দিকে অফিস থেকে বাসায় ফিরে দরজা বন্ধ পান। অনেক ডাকাডাকি করেন। একপর্যায়ে দরজা না খুললে আমজাদ অন্য এক স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে ওই স্বজন তাদের বিরোধ মেটাতে চতুর্থতলার ওই ফ্ল্যাটে আমজাদকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। সে সময় ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি রহস্যজনক মনে হলে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করতেই শাহানাসহ তার দুই সন্তানকে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। দ্রুত প্রথমে তাদের বাড্ডা জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত সোয়া ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু আরিয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, ২০১১ সালের ডিসেম্বরে শাহানাকে বিয়ে করেন আমজাদ। ওই দম্পতির দুই সন্তান ছিল। তাদের বাড়ি কুড়িগ্রামের রৌমারী থানার শৌলমারি গ্রামে। আমজাদ বনানীতে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। 

সর্বশেষ খবর