সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
ব্র্যাকের গবেষণা তথ্য

প্রশিক্ষণ ও দক্ষতায় দ্বিগুণ বাড়ে নারীদের আয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও দক্ষতামূলক কাজে সম্পৃক্ত করলে নারীদের আয় প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায় উল্লেখ করে গবেষণা তথ্য উপস্থাপন করেছে ব্র্যাক। গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি : কেন জেন্ডার গুরুত্বপূর্ণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ গবেষণা তথ্য তুলে ধরা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এ বৈঠকের আয়োজন করে। ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেইঞ্জের পরিচালক কে এ এম মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা শারমীন বেণু, বিশেষ অতিথি ছিলেন ডেলিগেশন অব দি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন টু বাংলাদেশের হিউম্যান অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের মিনিস্টার কাউন্সিলর ইয়রগেন হেইম্যান। ‘নারায়ণগঞ্জে দরিদ্র ও অবহেলিত নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা : প্রভাব ও মূল্যায়ন’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট ইউনিটের সমন্বয়কারী অ্যান্ড্রু জেনকিন্স, রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট সাফায়েত খান ও রিসার্চ ফেলো ফাতেমা জহুরা খাতুন।

গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৪ সালে যেসব নারীর গড় আয় দুই হাজার টাকা ছিল, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতামূলক কাজের কারণে ২০১৫ সালে তা বেড়ে গড়ে ৪ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, অনেক নারী হয়েছেন সফল উদ্যোক্তা। আয়মূলক কাজ ও রোজগার বাড়ার পাশাপাশি নারীদের বাসার বাইরে গিয়ে চলাফেরার স্বাধীনতা এক বছরে ৯ শতাংশ বেড়েছে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ এ তিন উপজেলায় ২০১৩ সালে তিন হাজার ৬০০ অবহেলিত ও দুস্থ নারীকে নিয়ে এ প্রকল্প শুরু করেছিল ব্র্যাক।

গোলটেবিল বৈঠকের প্রধান অতিথি মাহমুদা শারমীন বেণু বলেন, ব্র্যাকের এ প্রকল্পের মাধ্যমে নারীরা শুধু স্বাবলম্বী হয়নি, বরং তাদের সচেতনতা ও আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়েছে। এই দিকটি লক্ষ্য রেখে ভবিষ্যতে সরকার ৪৯১টি উপজেলায় স্থানীয় প্রয়োজনীয়তার আলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ৩০ জন কিশোরী ও ২০ জন কিশোরের সমন্ব্বয়ে দুই বছরের জন্য কিশোরী ক্লাব গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারে ইয়রগেন হেইম্যান বলেন, জেন্ডার সমতা ও নারী ক্ষমতায়নে এ প্রকল্প একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, তিন হাজার ৬০০ জন নারীর মধ্যে ৯২ শতাংশই আয়মূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এ প্রজেক্টের সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদ এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের জন্য একটি জেন্ডার আচরণ নীতিমালা ও বাংলাদেশ ওমেন চেম্বারের জন্য একটি জেন্ডার নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ‘ইকোনমিক ইমপাওয়ারমেন্ট ফর পুওর অ্যান্ড ভালনারেবল ওমেন ইন বাংলাদেশ—ইইপি প্রজেক্ট’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফেরদৌস জাহান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই ও স্পেশাল প্রোগ্রাম বিভাগের মহাব্যবস্থাপক স্বপন কুমার রায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রজেক্ট ডিরেক্টর আবুল হোসেন, ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির সমন্বয়কারী খালেদা খানম প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর