বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিয়ে না দেওয়ায় মেয়ের বাবার বাড়িতে আগুন

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরে মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় মেয়ের বাবার ঘরে জ্বালানি পদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে দুটি থাকার ও গরুর ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে এক বখাটে যুবক। ওই যুবক সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের নাওভাংগা এলাকার দিলাস মিয়ার পুত্র। এলাকায় তাকে সবাই টুটুল চোরা হিসেবেই চেনেন। টুটুল ইতিপূর্বে আরও দুটি বিয়ে করেছেন। এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানায় সোমবার রাতে মামলা হয়েছে। নম্বর ৮০। স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, টুটুল এলাকায় একজন চিহ্নিত অপরাধী। তার নামে থানায় হত্যা, ছিনতাই, চুরির অভিযোগ রয়েছে। একটি খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়ে আড়াই বছর জেল হাজতে থেকে বছরখানেক আগে তিনি বের হয়ে আসেন। জেল থেকে বের হয়েইে প্রতিবেশী সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। মেয়ের বাবা সাড়া না দেওয়ায় তাকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতেন। পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিতেন। তবে ভয়ে কেউ টুঁশব্দ পর্যন্ত করেননি। টুটুলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়ে তিন মাস আগে পাশের কুঠুরাকান্দায় মেয়ের বিয়ে দেন বাবা। বিয়ের পরও টুটুলের অত্যাচার থামেনি। ১৮ দিন আগে টুটুল মেয়েটির শ্বশুরবাড়ি গিয়ে অপহরণের চেষ্টা করে হাতেনাতে ধরা পড়েন।

মানসম্মানের ভয়ে মুচলেকা নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন টুটুলকে ছেড়ে দেন। ওখান থেকে ছাড়া পেয়ে এলাকায় এসে টুটুল প্রকাশ্যেই বলে বেড়ান, ওদের পুড়িয়ে মারা হবে। ঘটনার দিন সোমবার রাত ৩টার দিকে আরও তিন-চার জন লোক নিয়ে দাহ্য পদার্থ দিয়ে ওদের থাকার ঘর ও গোয়ালে আগুন ধরিয়ে দেন। এর মধ্যেই টিনের দুটি ঘর পুড়ে যায়। শুধু একটি গরু বের করা গেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মেয়েটিকে বিয়ে করতে না পেরে টুটুল ওদের সবাইকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন। কেউ মারা না গেলেও প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা মূল্যের সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনার পর টুটুল গাঢাকা দিয়েছেন। মেয়েটি জানিয়েছে, বিচার না পেলে আত্মহত্যা করবে। টুটুলের কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে বলে এলাকার অনেক লোক দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (তদন্ত) বিপ্লব কুমার সরকার জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। টুটুল নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। টুটুলকে ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’ শেরপুরের পুলিশ সুপার রফিকুল হাসান গনি জানিয়েছেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর