মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সুরঞ্জিত ছিলেন আমাদের শিক্ষক

—————— সৈয়দ আশরাফ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমি সংসদে এসেছি প্রথমবার ১৯৯৬ সালে। আর উনি (সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত) এসেছিলেন সেই ১৯৭০ সালে। তার কাছ থেকে আমরা সংসদীয় রাজনীতি ও নিয়মনীতি শিখেছি। কীভাবে বক্তৃতা করতে হবে তা শিখেছি। তিনি ছিলেন আমাদের মতো নবীন সংসদ সদস্যদের শিক্ষক।’ গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘সুনামগঞ্জ সমিতি ঢাকা’ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্মরণে এ সভার আয়োজন করে। সমিতির সভাপতি আকবর হোসেন মন্জুর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, প্রবীণ সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী, সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, শামছুন নাহার বেগম, সাবেক সচিব এম আই চৌধুরী, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সি এম তোফায়েল সামি প্রমুখ।

সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘উনার সঙ্গে আমার একটা মিল রয়েছে যে আমরা দুজনই ভাটি অঞ্চলের মানুষ। তিনি শুধু ভাটি অঞ্চলের মানুষই নন, তিনি সারা দেশের। আজ তিনি পৃথিবীতে নেই। আমি তার শূন্যতা অনুভব করি।’ মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি বিশাল মনের মানুষ ছিলেন। তিনি জ্ঞান নিজের মধ্যে রেখে দিতেন না। সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেন। শুধু সংসদে নয়, রাজনীতির মাঠেও তাকে দেখে মুগ্ধ হয়েছি। তিনি যখন বক্তব্য দিতেন তখন মনে হতো সিনেমার নায়ক, যাত্রার নায়ক। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত শুধু একজনই, এমন একজন আর কোনো দিন এই বাংলার বুকে আসবে না।’

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আমার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ছিলেন। শুধু সংসদ নয়, সংসদের বাইরেও আমাদের সম্পর্ক ছিল নিবিড়। বয়সে আমি বড় হলেও বৃহত্তর সিলেটের মানুষ হিসেবে একে অন্যের খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। রাজনীতিতে এত অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান আমি আর দেখিনি। তিনি সিলেটের নেতা নন, অল্প বয়সেই জাতীয় নেতায় পরিণত হন।’

স্মৃতিচারণা করে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘স্বাধীনতার পর একজন তরুণ এবং একমাত্র বিরোধী দলের সংসদ সদস্য হিসেবে তার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয়। সেই সময় তার একটি নতুন পরিচয় পেলাম সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে। আমার মনে হয়, এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে সম্মান দেখিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সুরঞ্জিত সেই সুযোগটা গ্রহণ করেছিলেন।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মূল চারটি নীতির মধ্যে গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দল শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে বড় ভুল করেছিল। তাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দরজা সব সময়ই খোলা। ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে আমাদের ব্যবহারে পরিবর্তন আনতে হবে। স্বাধীনতার সময় ২৩ শতাংশ সংখ্যালঘু ছিল। বর্তমানে তা কমে ১২ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। আমাদের এ ব্যাপারে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।’

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত শুধু একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না; তিনি ছিলেন রাজনৈতিক কবি।’

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্ত বলেন, ‘শুধু আপনাদের ভালোবাসায় তাকে দুঃখু সেন থেকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তে পরিণত করেছেন। আপনারা তার মৃত্যুর পর যে সম্মান দেখিয়েছেন তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর