বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
আজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর বিদ্যুৎ পেল থানচিবাসী

বান্দরবান প্রতিনিধি

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর বিদ্যুতায়নের আওতায় এলো বান্দরবানের দুর্গম থানচি উপজেলা। ডিজিটালের আধুনিক যুগে বিদ্যুতের আলো পৌঁছানোর মাধ্যমে অন্ধকারাচ্ছন্নের অভিশাপ জীবন থেকে মুক্তি পেলেন থানচিবাসী। থানচি উপজেলাবাসী এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। আজ ১ মার্চ বেলা ১১টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বিদ্যুৎ প্রকল্পটি উদ্বোধনের মাধ্যমে থানচিবাসীর তৃতীয় স্বপ্ন পূরণ হলো। একই সময়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বান্দরবান পিটিআই (প্রাইমারি টিচার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট) ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। জানা গেছে, বান্দরবান পার্বত্য জেলার থানচি উপজেলাটি ছিল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং পশ্চাৎপদ একটি অঞ্চল। উপজেলাটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও পর্যটনসহ সব দিকে পিছিয়ে ছিল। কোনো প্রকার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় থানচি উপজেলাবাসী দুই থেকে তিন দিন অতিবাহিত করে সাঙ্গু নদ পথে রুমা উপজেলার ওপর দিয়ে জেলা সদরে যাতায়াত করতেন। ২০০০ সালে ৮৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের ফলে একধাপ এগিয়ে যায় থানচি উপজেলা। থানচিবাসী জেলা শহরে দিনে এসে দিনে বাড়িতে ফিরে যেতে পারায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় সাঙ্গু নদ। নৌকার মাধ্যমে এই নদ পারাপার করতে হতো। থানচিবাসীর দীর্ঘদিনের এই কষ্ট নিরসনে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির প্রচেষ্টায় বর্তমান সরকার সাঙ্গু নদের ওপর ব্রিজ নির্মাণ করে। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাঙ্গু ব্রিজ উদ্বোধন করেন এবং থানচিকে বিদ্যুতায়নের আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালে সার্ভে কাজ শেষ করে ২০১৫ সালে থানচি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণে টেন্ডার আহ্বান করে। কাজ শেষ করতে সময় লাগে ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত। থানচিবাসীকে চলতি বছরের শুরুতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। আজ বেলা ১১টায় বান্দরবান জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে থানচি গ্রামীণ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে তারা নাগরিক অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।

বিদ্যুতায়নের ফলে থানচিতে প্রশাসনিক কাজের গতিশীলতাসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও পর্যটন খাতে অর্থনৈতিক মুক্তির বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। তারা অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বার উন্মোচনে থানচিতে বিদ্যুতায়নের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।

থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য হ্লা চিং মারমা জানান, বিদ্যুতায়নের কারণে থানচি উপজেলাবাসীর অর্থনৈতিক, সামাজিক, জীবন-জীবিকাসহ সব ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসবে। বিদ্যুৎ থানচিবাসীর জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।

সর্বশেষ খবর