রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

কর্মসৃজন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলায় কর্মসৃজন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ অনিয়মে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার ও খোদ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা। কর্মহীন শ্রমজীবীদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প চালু করেছে সরকার। তবে বঞ্চিত-অসহায়দের তালিকায় স্কুল-শিক্ষক ও ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। তারা মজুরির টাকা উত্তোলন করে ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাঠে কাজ না থাকায় কর্মহীন প্রান্তিক শ্রমজীবীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ৪০ দিনের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে সপ্তাহের পাঁচ দিন সরকারিভাবে গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ করছে কর্মসৃজন প্রকল্পের ৮ হাজার ৭৪৭ জন শ্রমিক। দৈনিক মজুরি হিসেবে ২০০ টাকা পাচ্ছেন তারা। প্রতি বছর কর্মহীন সময়ে এ প্রকল্প চালু করা হয়। অভিযোগ যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলাতেই পুকুরচুরির ঘটনা ঘটেছে। শ্রমিক ছাঁটাই, নতুন শ্রমিক অন্তর্ভুক্তির নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, গত অর্থবছরের তালিকাভুক্তরাই চলতি অর্থবছরে কাজ করবে এমন নিয়ম থাকলেও ইউপি সদস্য ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা টাকার বিনিময়ে তালিকা কাটছাঁট করে নতুন তালিকা করছেন, যা সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত। সদর, আদিতমারী, কালিগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু তালিকা দেখা গেছে, তালিকার অনেকেই এখন এলাকায় নেই।

থাকলেও কেউ হয়েছেন স্কুলশিক্ষক, ইউপি সচিব, ইউপি সদস্য, কেউ করছেন ব্যবসা। ফলে এসব শ্রমিক কাজে না গিয়েও মজুরির টাকা তুলে ভোগ করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিকদের তালিকায় দেখা যায়, ২২৭ নং কার্ডধারী মফিজুল হক। যিনি এখন মহিষাশ্বহর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। ১৫৭ নং কার্ডধারী ইমদাদুল হক বাড়ি-গাড়ির মালিক, চাকরি করেন বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। ২০২ নং কার্ডধারী তোজাম্মেল হক প্রতিষ্ঠিত সার ব্যবসায়ী সাবেক ইউপি সদস্যের ছেলে। ডিস ব্যবসায়ী মানিক মিয়ার কার্ড নং ৬২। সাবেক সংরক্ষিত নারী সদস্যা শামছুন নাহারের স্বামী আবদুল হামিজের কার্ড নং ১৩৫।

আদিতমারী উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসার (পিআইও) মফিজুল ইসলাম জানান, ‘এ উপজেলায় মোট এক হাজার ৭২৪ জন শ্রমিক কর্মসৃজন প্রকল্পে রয়েছেন। যারা অনুপস্থিত থাকবেন তাদের মজুরির টাকা কেটে রাখা হবে। নাম পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই।’

জেলা প্রশাসক আবুল ফয়েজ মো. আলাউদ্দিন খান বলেন, ‘কর্মসৃজন প্রকল্পে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। কীভাবে কর্মজীবীদের নাম তালিকায় রাখা হয়েছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর