বুধবার, ২২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
বাংলাদেশ প্রতিদিনে সংবাদ

দুই শিশুকে স্তন্যপান থেকে বঞ্চিত করায় দুই পুলিশকে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক

মায়েদের আটকে রেখে দুগ্ধপোষ্য দুই শিশুকে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মাতৃদুগ্ধ পান থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) দুই পুলিশ সদস্যকে তলব করেছে হাই কোর্ট। একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। ২৯ মার্চ ওসি জিয়াউল মোরশেদ ও এসআই মো. মাহাতাব হোসেনকে আদালতে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে। এ ছাড়া অমানবিকভাবে দুই মাকে ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার ঘটনাকে কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না— তা জানতে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট। এ ঘটনায় ১৪ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ প্রতিদিন।

র সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ডিআইজি, মাদারীপুর পুলিশ সুপার, সদর থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী পরিষদের সভানেত্রী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ, অ্যাডভোকেট শোভানা বানু ও নাজনীন আরা আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস। ১৪ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘দারোগার ক্রোধের শিকার দুই মায়ের ১৩ ঘণ্টা ভোগান্তি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া এ বিষয়ে আরও সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০ মার্চ এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রানা কাওসার।

বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার (১২ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে বিতর্কিত একটি জমির তদন্ত কাজে যান থানার এসআই মাহাতাব হোসেন। এ সময় তিনি জমির পাশের বাড়ির খালেক বেপারীর ছেলে পনির হোসেনের কাছে মামলাসংক্রান্ত বিষয় জানতে চান। পনির কিছু জানেন না বলে জানান। এতে দারোগা মাহাতাব ক্ষিপ্ত হয়ে পনিরকে থাপড় মারেন। একপর্যায়ে পনির পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে মাহাতাব আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে ফোন করে থানা থেকে তিন গাড়ি পুলিশ এনে পনিরের বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হয়। এ সময় পনির ও তার বড় ভাই-বোনের ঘরে মূল্যবান আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসনসহ রান্নার চুলাও ভেঙে ফেলেন। পনিরের স্ত্রী ঝুনু বেগম ও তার বড় ভাইয়ে স্ত্রী আকলিমা বেগমকে বেলা ১১টার দিকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। তখন ঝুনু বেগমের তিন মাসের শিশু ও আকলিমার ১৮ মাসের শিশুকে কোল থেকে রেখে যেতে বাধ্য করেন। পরে রাত ১২টার দিকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন।

সর্বশেষ খবর