শিরোনাম
রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সুনামগঞ্জের ফসলহারা এক গ্রামের কথা

মাসুম হেলাল, সুনামগঞ্জ

চারপাশে সুবিশাল হাওরের অথৈ জলরাশি। মাঝখানে ছবির মতো একটি গ্রাম। নাম সালিয়ানী। ধর্মপাশা উপজেলার শতভাগ বোরো ফসলনির্ভর গ্রামটিতে ৭০০ মানুষের বাস। গ্রামের ১২০টি পরিবারের মধ্যে নিজস্ব জমি আছে ৫০টির। বাকিরা ক্ষেতমজুর, বর্গাচাষি। সবার নির্ভরতা গ্রাম লাগোয়া হামলাদিঘা হাওরে আবাদ করা বোরো ফসলের ওপর। বছরে একবার মাত্র বোরো ধান চাষ হয় এই হাওরে। বসতি স্থাপনের পর থেকে এই ফসলের ওপর নির্ভর করে চলেছে গ্রামটি। সংসারের যাবতীয় প্রয়োজন, বিয়েশাদি, পড়ালেখা কিংবা সামাজিক বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সবই এই বোরো ফসল থেকে।

এবার চৈত্রের শেষভাগে এসে যখন হাওরের পোয়তি ধান মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে হাসির ঝিলিক ছড়াচ্ছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে যেন বাজ পড়ল পুরো গ্রামের মানুষের মাথায়। ১৮ চৈত্র ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে নিমিষেই তলিয়ে গেল কৃষকের সারা বছরের স্বপ্ন। কবরের নিস্তব্ধতা নেমে এলো যেন গ্রামজুড়ে। এখন আর ধনী-গরিবের ভেদাভেদ নেই গ্রামে। এক বেলা খেলে পরের বেলার খাবারের জোগাড়ে নেমে পড়ে সম্পন্ন গৃহস্থ পরিবারও। গ্রামের প্রতিটি মানুষ এখন দেনার দায়ে আবদ্ধ। ধর্মপাশার মধ্যনগর ইউনিয়েনের সালিয়ানী যেন সুনামগঞ্জের হাওরের ফসলহারা আরও হাজারো গ্রামের প্রতীক, যেখানে সুখে নেই কেউ। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ দিয়ে যাত্রা করা ফসল হারানো মানুষগুলোর মনে এখন সীমাহীন কষ্ট।

সালিয়ানী গ্রামের সবচেয়ে বড় গৃহস্থ সামির হোসেন। হামলাদিঘা হাওরে এবার আবাদ করেছিলেন ২৩ একর জমি। হাওর ডুবে যাওয়ার করণে একমুষ্টি ধানও গোলায় ওঠেনি তার। প্রতি একরে খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। এই কৃষকের অবস্থা এখন গ্রামের অপরাপর ভূমিহীনের মতো। গ্রামে যেন ধনী-গরিব সবই সমান। কারও কাছে কারও হাত পাতার সুযোগটিও নেই। গ্রামের বর্গাচাষিদের অবস্থা আরও কাহিল। প্রতি একর জমি আবাদের জন্য গৃহস্থকে অগ্রিম দিতে হয়েছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা। নিজের শ্রম বাদ দিয়েও আছে চাষাবাদ, সার, বীজ, কীটনাশকের মোটা অঙ্কের খরচ। এর সবটুকুই এখন পানির নিচে। দেনার দায়ে বন্দী গ্রামের প্রতিটি কৃষক।

জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কর্মসূচি : জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা গতকাল অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সাম্প্রতিক অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট বিভাগের জেলাসমূহের বিপন্ন ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সাহায্যার্থে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা ত্রাণ বিতরণ, সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য অনুদান প্রদান, মাসব্যাপী ত্রাণ সংগ্রহ ও বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসন সহায়তা কার্যক্রম। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা সংশ্লিষ্ট জালালাবাদ কল্যাণ ট্রাস্ট, জালালাবাদ শিক্ষা ট্রাস্ট ও গঠিত ‘বন্যাত্রাণ সহায়তা কমিটি’ এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। বিজ্ঞপ্তি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর