রবিবার, ১৪ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

ফারুক তার স্ত্রীকেও যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন

মাহবুবুর রহমান, শ্রীপুর (গাজীপুর)

গাজীপুরের শ্রীপুরে কন্যাসহ বাবার আত্মহত্যার ঘটনায় আর কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। ছয়জন এখনো পলাতক। একমাত্র গ্রেফতারকৃত ইউপি সদস্য আবুল হোসেন জেল হাজতে। অন্যদিকে যৌন হয়রানিতে অন্যতম অভিযুক্ত কর্ণপুর সিটপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে ফারুক তার স্ত্রীকেও যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন। এমনই ঘটনা বর্ণনা করেছেন ফারুকের স্ত্রী শেফালী আক্তার। আত্মহত্যাকারী পরিবারের একমাত্র বেঁচে থাকা বিচারপ্রার্থী হালিমা বেগম। গতকাল সকাল ৮টার দিকে শ্রীপুরের কর্ণপুর গ্রামে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘শুনছি পুলিশ আসামি ধরার জন্য চেষ্টা করছে। আমি ফারুকের ফাঁসি চাই। ফারুককে ধরতেই হবে।’ হালিমার বাড়িতে শ্রীপুর থানার একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও দুজন গ্রামপুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে গেছেন। আশপাশের বাড়িগুলোয় কোনো পুরুষ লোক পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত ফারুকের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে ঘর তালাবদ্ধ। কোনো লোকজন নেই। পাশের বাড়ির ফাইজুদ্দিন বলেন, ঘটনার পর থেকে এ বাড়ির লোকজনকে দেখা যাচ্ছে না। ফারুক প্রথম বিয়ে করেন একই উপজেলার নারায়ণপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের মেয়ে শেফালী আক্তারকে। ফারুক তার স্ত্রীকেও যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের কারণে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছয় মাসের বেশি সংসার টেকেনি।

শেফালী আক্তার বলেন, ‘আনুমানিক আড়াই বছর আগে তার বিয়ে হয় ফারুকের সঙ্গে। ফারুক তার বাবার সংসারে দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। বিয়ের পর থেকে শেফালীকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন ফারুক। বাইরে থেকে যখনই ফারুক বাড়ি আসতেন তখনই গাঁজার গন্ধ পাওয়া যেত। ফারুক প্রতিদিন গাঁজা সেবন করতেন। বাবার বাড়ি থেকে কখনো ৫০, কখনো ৯০, কখনো বা ৩০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দিতে বলতেন। না দিলে তাকে মারধর করতেন।

প্রসঙ্গত, ২৯ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্রীপুর রেলস্টেশনের পশু হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় চলন্ত তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে পালিত মেয়ে আয়েশা আক্তারসহ বাবা হযরত আলী আত্মহত্যা করেন। মেয়েকে শ্লীলতাহানি, গরু চুরি যাওয়া ও প্রতিবেশীদের হামলার হুমকির বিচার না পাওয়ায় তিনি আত্মহত্যা করেন।

কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশীদ বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য জেলা পুলিশও তত্পর রয়েছে।

সর্বশেষ খবর