রবিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইসি কর্মকর্তাদের রদবদলে আইন লঙ্ঘন অগ্রহণীয় : সুজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, ইসি কর্মকর্তাদের রদবদলে আইন লঙ্ঘন গ্রহণযোগ্য নয়। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনের সচিব মিলে কমিশনের কর্মকর্তা বদলি-সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, যা আইন ও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই বিষয়টি নিয়ে নাগরিক হিসেবে আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। গতকাল সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি সুস্পষ্ট যে, আইন ও আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বদলিসহ সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কমিশনের সদস্যদের যৌথ সিদ্ধান্তে নিতে হবে। কারণ নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি কমিশনের নির্বাচন-সংক্রান্ত দায়িত্বের সঙ্গে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট। এর ব্যত্যয় ঘটলে কমিশন নিজেই আইন ভঙ্গ করবে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ বিবৃতিতে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহি  প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়।

গণমাধ্যমকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনকি এ ক্ষেত্রে একজন কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত নিয়োগ ও বদলি-সংক্রান্ত কমিটিকেও সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা হয়েছে। এটি আইন ও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

বিবৃতি বলা হয়, বিরাজমান আইনানুযায়ী, নির্বাচন কমিশন একটি যৌথ সত্তা। কমিশনের পাঁচজন সদস্য তাদের প্রদত্ত ক্ষমতা যৌথভাবে প্রয়োগ করবেন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর ধারা ৪ অনুযায়ী, পুরো কমিশন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে দায়িত্ব না দিলে তিনি এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।

বিবৃতিতে ‘টিএন সেশন বনাম ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া (১৯৯৫) (৪ এসসিসি)’ মামলায় ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রায় তুলে ধরে বলা হয়, নির্বাচন-সংক্রান্ত ভারতীয় ও বাংলাদেশের সাংবিধানিক বিধান প্রায় একই। সেই রায়ে বলা হয়েছে, ‘যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কমিশনের সভাপতি এবং “...সভাপতির দায়িত্ব হবে সভায় সভাপতিত্ব করা, নিয়মকানুন বজায় রাখা, দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করা, সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও লিপিবদ্ধকরণ নিশ্চিত করা এবং এর কার্যক্রম নির্ঝঞ্ঝাটভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে যা কিছু প্রয়োজন তা করা। ... তার দায়িত্ব হলো সভায় এমনভাবে আচরণ করা, যাতে তিনি তার সহকর্মীদের আস্থা ও সম্মতি অর্জন করতে পারেন। একজন সভাপতি এটি অর্জন করতে সক্ষম হবেন না, যদি তিনি কমিশনের অন্য সদস্যদের তার অধীনস্থ মনে করেন’’।’

সর্বশেষ খবর