শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

আমরা কি আফ্রিকার জঙ্গলে বাস করছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, দেশ এখন ক্ষমতাসীনদের ‘রাহুগ্রাসে’ আক্রান্ত। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এটা কীভাবে সম্ভব? একজন কিশোরীকে কলেজে ভর্তির নামে সরকারি দলের একজন নেতা কর্তৃক সম্ভ্রমহানি করার পর মা ও মেয়ের মাথার চুল কেটে দেওয়া। মঈন খান শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমরা আফ্রিকার জঙ্গলে বাস করছি নাকি কোনো সভ্য দেশে বাস করছি। সারা দেশে আজ এসব অপকর্ম ঘটে চলেছে। নেপথ্যে যাদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে এসব ভয়ঙ্কর অপরাধীরা এ ধরনের বর্বর কাণ্ড ঘটাচ্ছে, যাদের রাহুগ্রাসে আজ সমগ্র জাতি আচ্ছন্ন হয়ে গেছে— তাদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বিএনপির এই নীতিনির্ধারক। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। বগুড়ায় মা-মেয়েকে নির্যাতনের প্রতিবাদে মহিলা দল এ কর্মসূচি আয়োজন করে। মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, কেন্দ্রীয় নেতা পেয়ারা মোস্তফা, শামসুন্নাহার ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা ওই ঘটনায় মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানান। ড. মঈন খান স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। আজকে যতই তাদের শক্তি থাকুক, যতই ক্ষমতা থাকুক, বুঝতে হবে তাদের শক্তি হচ্ছে বন্দুকের শক্তি, তাদের শক্তি হচ্ছে সন্ত্রাসের শক্তি। যারা এ সরকারের সমালোচনা করবে, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলবে, তাদের হুমকি-ধমকি, দমন-পীড়নের মাধ্যমে মুখ বন্ধ করে দেবে অথবা গায়েব করে দেবে, তাকে গুম করে ফেলবে, জেলে পাঠাবে, অত্যাচার করবে— এভাবে তো কোনো দেশ চলতে পারে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের একটা মাত্র পথই এখন খোলা আছে। সেটি হলো এ ক্ষমতা ছেড়ে অবাধ, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা। তিনি বলেন, এই সরকারের যদি বিন্দুমাত্র লজ্জাবোধ থাকে, সরকারের যদি আত্মসম্মানবোধ থাকে তাহলে এই মুহূর্তে তাদের পদত্যাগ করা উচিত। মঈন খান আরও বলেন, আজকে দেশের সমগ্র সমাজব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এ সরকার দেশে কোনো ভালো কাজ করতে পারেনি, জনকল্যাণে কিছু করতে পারেনি। আজ প্রধান বিচারপতির মুখে শুনতে হয় যে, তাকেও পর্যন্ত কথা বলতে দেওয়া হয়নি। রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, এ সরকার ৫৭ ধারার মাধ্যমে বাকশাল কায়েম করেছে। সাংবাদিক গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। ষোড়শ সংশোধনীর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশকে ‘ঐতিহাসিক’ অভিহিত আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যুবলীগ-ছাত্রলীগ-শ্রমিক লীগের অপকর্মে সাধারণ মানুষের বাড়িতে বাড়িতে যে মাতম সৃষ্টি হয়েছে— সে মুহূর্তে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় মানুষের মনে কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার করেছে। রিজভী আহমেদ বগুড়ায় পুলিশের এসপির সঙ্গে খুনের মামলার আসামির দহরম মহরম চলছে বলে অভিযোগ করে বলেন, ধর্ষণ মামলার আসামি তুফান সরকারের বড় ভাই মতিন সরকারের নামে খুনের মামলাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে। অথচ তিনি পুলিশের এসপির সঙ্গে মিটিং করেন। পুলিশের উৎসবে যাচ্ছেন। শহরে ঘোরাফেরা করেন। মন্ত্রীরা সেখানে গেলে রিসিভ করেন। কিন্তু তাকে ধরা হয় না।

সর্বশেষ খবর