সোমবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা
বকেয়া বেতন দাবি

পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ-ভাঙচুর আহত ৮

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের টিয়ার শেল নিক্ষেপে স্থানীয় মাদ্রাসার পাঁচ শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের নিক্ষিপ্ত ইটপাটকেলের আঘাতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গতকাল সকাল ১০টার দিকে মুলাইদ শিশু পল্লী রোডের ইউনিয়ন গার্মেন্ট ও ইউনিয়ন নিটওয়্যার লিমিটেডে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন— স্থানীয় ওয়াজেদ আলী ইসলামিয়া কওমি ও এতিমখানা মাদ্রাসার ছাত্র সিদরাতুল, হাবিবুর, ইলিয়াস, জায়েদুল, আজিজুল ও শিল্পপুলিশের তিন সদস্য। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কারখানার শ্রমিকরা জানান, দুই মাস ধরে কর্তৃপক্ষ বকেয়া বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শ্রমিকদের ঘুরাচ্ছে। কারখানার স্টাফদের বেতন বকেয়া রয়েছে তিন মাসের। শনিবার বেতন দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। এদিনও বেতন না নিয়ে শ্রমিকদের ফিরে যেতে হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এমসি বাজার শিশু পল্লী রোড অবরোধ করে।

এ সময় স্থানীয় আরেকটি কারখানার শ্রমিক বহনকারী বাস আটকে যায়। পরে শিল্পপুলিশ এসে শ্রমিকদের অনুরোধ করে অবরোধ সরিয়ে দেয়।  গাজীপুর শিল্পপুলিশের এসআই সেলিম রেজা জানান, শ্রমিকরা সকাল ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ হয়ে এমসিএ বাজার শিশু পল্লী রোড ফের অবরোধ করে। তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে শ্রমিকরা। একপর্যায়ে ৪-৫ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করলে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় শ্রমিকদের আরেকটি গ্রুপ কারখানার গ্লাস, দরজা, জানালা ভাঙচুর করে। শ্রমিকদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে বেলা ১১টার দিকে শ্রীপুর থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করলে শ্রমিকরা নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়।  স্থানীয় ওয়াজেদ আলী ইসলামিয়া কওমি ও এতিমখানার মুফতি মনিরুল ইসলাম গাজীপুরী জানান, তার প্রতিষ্ঠানের পাঁচজন ছাত্র কাঁদুনে গ্যাসে আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কারখানার উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) বজলুর রশীদ জানান, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কারখানার স্টাফদের মে মাসের অর্ধেক, জুন ও জুলাই মাসের এবং শ্রমিকদের জুন ও জুলাই মাসের বেতন বকেয়া হয়ে পড়ে। শ্রমিকদের ১৬ আগস্ট বেতন দেওয়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা শনিবার কারখানায় এসে কাজ বন্ধ রেখে ফিরে গেছে। রবিবার এসে সড়ক অবরোধ ও কারখানায় ভাঙচুর চালিয়েছে। এতে স্টাফদেরও ইন্ধন রয়েছে। দুটি কারখানায় মোট ১১০০ শ্রমিক কাজ করছিল।

সর্বশেষ খবর