বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

‘খুনিদের বিচার করতে পেরে আমরা গর্বিত’

আদালত প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ করে বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়েছিল। পরে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে ওই অধ্যাদেশ বাতিল করেছেন। ফলে খুনিদের বিচার হয়েছে। বিচার করতে পেরে বিচার বিভাগের সদস্য হিসেবে তারা গর্বিত।

গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের জগন্নাথ-সোহেল স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে ঢাকার বিচারকরা এ কথা বলেন। ঢাকার নিম্ন আদালতের বিচারকদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান। সভাপতির বক্তব্যে এস এম কুদ্দুস জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন করেননি, তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। নেহেরু, জিন্নাহ যা পারেননি তা বঙ্গবন্ধু পেরেছেন। তিনি অসামপ্রদায়িক বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছেন। অসামপ্রদায়িক শক্তি পাকিস্তানকে লালন করতেন বলেই সেদিন তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষের কাছে আমরা ছিলাম কাঠগড়ায়। পরে দীর্ঘ সময় পার হলেও বাংলাদেশের আদালতেই প্রয়াত বিচারক কাজী গোলাম রসুল খুনিদের বিচার করেছেন। তিনি বলেন, যে ভূখণ্ড এখন  বাংলাদেশ, সেটি বঙ্গ, বরেন্দ্র, পূর্ববঙ্গ, পূর্ব পাকিস্তান ইত্যাদি নামে পরিচিত ছিল। একটা জাতি ছিল। কিন্তু তার স্বীকৃতি ছিল না। বঙ্গবন্ধুই নির্ধারণ করেছেন এদেশের নাম বাংলাদেশ। এটা পেয়েছি বঙ্গবন্ধুর নেতৃতে। তিনি অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রবর্তক, বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনার রূপকার বঙ্গবন্ধু। অথচ তাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা বলেন, একজন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে খুনিরা। কিন্তু এখন কোটি কোটি মানুষের মুখে বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু না হলে দেশ স্বাধীন হতো না। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, একাত্তর দেখিনি। ’৭৫ এর কথা মনে নেই। তবে ৩২ নম্বরে গিয়ে সবই দেখেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য ৩২ নম্বরে দেখেছি। শিশু রাসেল ও মহিলারা ঘাতকদের বুলেটের শিকার হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার রূপকার। ইতিহাসের মহানায়ক। সেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। এর চেয়ে আর কলঙ্কের কি আছে।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আরা বেগম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জয়বাংলা স্লোগানে দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই মুজিবকে মেরে ফেলা হয়েছে। ইনডেমনিটি দিয়ে বিচার বন্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু বিচার ঠেকানো যায়নি। এ ছাড়া ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক, মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক, বিভাগীয় বিশেষ জজ, বিশেষ জজ আদালত, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, অন্যান্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেড় শতাধিক বিচারকের উপস্থিতিতে এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলমসহ অন্য আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর