সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী দিনাজপুরের সেই ইয়াসমিন ট্র্যাজেডি দিবস আজ। ১৯৯৫ সালে পুলিশ কর্তৃক ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার ইয়াসমিনের ধর্ষণ ও হত্যার বিচার হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দোষী তিন পুলিশের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
ইয়াসমিন ট্র্যাজেডির আজ ২২তম বার্ষিকী। এ দিনে দেশব্যাপী পালিত হয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস হিসেবে।
প্রতি বছর দিনাজপুরে সর্বদলীয়ভাবে দিবসটিকে পালনের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২৪ আগস্ট দিনাজপুর শহরের প্রতিটি ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাচ ধারণ ও শোক র্যালি। দিবসটি পালনে সম্মিলিত নারী সমাজ, মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।নিহত ইয়াসমিনের মা শরীফা বেগম ২৪ আগস্ট তার বাড়িতে ফকির, মিসকিনদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ ও দোয়া খায়েরের আয়োজন করেছেন।
উল্লেখ্য, আজ থেকে ২২ বছর পূর্বে ১৯৯৫ সালের এ দিনে দিনাজপুরে একদল বিপথগামী পুলিশের হাতে তরুণী ইয়াসমিন নির্মমভাবে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হয়। এ বর্বরোচিত ঘটনার প্রতিবাদে-বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দিনাজপুরের মানুষ। প্রতিবাদী মানুষকে লক্ষ্য করে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে সাতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।
ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তিনটি আদালতে ১২৩ দিন বিচার কাজ শেষে ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ আবদুল মতিন মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলার রায়ে আসামি পুলিশের এএসআই মঈনুল, কনস্টেবল আবদুস সাত্তার ও পুলিশের পিকআপ ভ্যান চালক অমৃত লাল বর্ম্মনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুর আদেশ দেন। আলামত নষ্ট, সত্য গোপন ও অসহযোগিতার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এএসআই মঈনুলকে আরও পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
চাঞ্চল্যকর ইয়াসমিন ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয় আট বছর পর ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।