সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সেই আজিজুলের কথায় মিলল যুবলীগ নেতার বস্তাবন্দী লাশ

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

রূপগঞ্জে মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় মাদক ব্যবসায়ী আজিজুল হকসহ তার সহযোগীরা মনির হোসেন (২৫) নামে এক যুবলীগ নেতাকে জবাই করে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের দুই মাস পর গ্রেফতারকৃত আজিজুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গতকাল সন্ধ্যায় কাঞ্চন পৌরসভার বিরাব খালপাড় এলাকায় মাটিতে পুঁতে রাখা বস্তাবন্দী ওই লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

মনির হোসেন ওই এলাকার সেরাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। অন্যদিকে আজিজুল হক একই এলাকার তাহাজ উদ্দিনের ছেলে। ভোলাব তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সেলিম মিয়া জানান, গত ৯ আগস্ট রাতে মনির হোসেন নিখোঁজ হন। থানায় জিডি, মসজিদে মাইকিং ও সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পাওয়ায় ‘অপহরণের পর গুম করে হত্যা’র আশঙ্কা করে মনির হোসেনের পরিবার।  এরপর ১২ আগস্ট তার স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ৭ সেপ্টেম্বর সাধারণ ডায়েরিটি অপহরণ মামলা হিসেবে রুজু করা হয়। ওই মামলায় আসামি করা হয় বিরাব খালপাড় এলাকার তাহাজ উদ্দিনের ছেলে আজিজুল হক, শান্তিপুর এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে সিয়েম, বোরহান উদ্দিনের ছেলে বাদল, লতিফ মিয়ার ছেলে জসীম ও বিরাব এলাকার খালেক মিয়ার ছেলে মামুনকে। গত ৭ অক্টোবর রাতে মামলার প্রধান আসামি আজিজুল হককে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়ারচর উপজেলার বড় বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মনির হোসেনের লাশ পুঁতে রাখা বস্তাবন্দী অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মনির হোসেনকে জবাই করে হত্যার পর বস্তাবন্দী করে মাটিতে পুঁতে রেখেছে বলে স্বীকার করেন আজিজুল হক। এদিকে মনির হোসেনের লাশ উত্তোলন করার পর এলাকায় কান্নার রোল পড়ে যায়।

 

মনির হোসেনের পরিবারের সদস্যরা বলেন, আজিজুল হকসহ তার সহযোগীরা এলাকায় মাদক বিক্রি করতেন। এর প্রতিবাদ করত মনির। মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করার জন্যই মনির হোসেনকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, আজিজুল হকের বিরুদ্ধে জমি জবরদখল, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তিনি তার মামার প্রভাব খাটিয়ে এসব অপকর্ম করলেও প্রতিবাদ করার কেউ ছিল না। কেন্দুয়া এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে ইসমাইল হোসেনের পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন আজিজুল। নিরীহ হওয়ায় ইসমাইল কোনো বিচার পাননি। আজিজুলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের শেষ নেই।

কাঞ্চন পৌর যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। মনির হোসেন যুবলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি কোনো অন্যায় কাজে জড়িত ছিলেন না। হত্যাকারীদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়। রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর